প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দালালচক্র। এই দালালদের কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন এবং দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিদেশগামী কর্মীদের দালালদের হাত থেকে রক্ষা করা এখন সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদেশে কাজের আশায় অনেক মানুষ সর্বস্ব বিক্রি করে দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছেন টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেকে প্রতারণার শিকার হয়ে বিদেশে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেখানে আইনি জটিলতায় পড়ছেন। এই পরিস্থিতি শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতিই নয়, রাষ্ট্রের জন্যও বড় ধরনের সংকট তৈরি করছে।
ড. ইউনূস বলেন, প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অথচ দালালচক্রের কারণে সেই সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, “বিদেশগামী কর্মীদের নিরাপদ, বৈধ ও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করতে দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার ইতোমধ্যে জনশক্তি রপ্তানি ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জবাবদিহিতা বাড়ানো, সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং বিদেশগামীদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দালালের প্রলোভনে না পড়ে সরকারি ও অনুমোদিত পথে বিদেশে যাওয়ার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কূটনীতিক, প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, দালালমুক্ত জনশক্তি রপ্তানি নিশ্চিত করা গেলে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে এবং বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার শক্তিশালী হবে।