সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারও নির্বাচিত সরকারের মতো সমান কর্তৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বহন করে এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের মতোই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টারা রাষ্ট্র পরিচালনার সকল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রাখেন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা নিয়ে জারি করা রুলের শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এনসিটি বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালনার সম্ভাব্য উদ্যোগ নিয়ে রিটকারীরা দাবি করেন পিপিপি আইনের ৭ ধারার অধীনে এমন সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ থাকা বাধ্যতামূলক। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,
“প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ যে কাজ করতে পারেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টারাও একই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় নেই।”
তিনি আরও জানান, এনসিটি পরিচালনা বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি; বিষয়টি প্রাথমিক আলোচনার পর্যায়ে আছে। তাই রিটকারীদের পক্ষ থেকে বিচারিক পর্যালোচনা চাওয়া “অপরিণত ও অযৌক্তিক” বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার ভাষায়, “প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো জুডিশিয়াল রিভিউ গ্রহণযোগ্য নয়—এমন বহু রায় আছে। তাই রিট খারিজের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।”
রিটকারীরা প্রশ্ন তোলেন—একটি বিদেশি কোম্পানিকে কেন এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আইন আমাকে সেই কর্তৃত্ব দিয়েছে। আমরা যা করছি, সম্পূর্ণ আইনের ভেতর থেকেই করছি।”
এদিকে রিটকারীরা যুক্তি দেন—বন্দরের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া নির্বাচিত সরকারের কাজ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ রাজনৈতিক নেতাদেরও একই মতামত। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এটা রাজনৈতিক মত হতে পারে, কিন্তু সংবিধান স্পষ্ট—অন্তর্বর্তী সরকারও নির্বাচিত সরকারের মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”
শুনানি শেষে আদালত ঘোষণা করে যে, এনসিটি চুক্তি প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৪ ডিসেম্বর। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন।