রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

জাতীয়

শ্রমিক থেকে নিউ ইয়র্কে ৩ বিলাসবহুল বাড়ি কিরণের

বাবা নূর মোহাম্মদ ছিলেন স্কুলের দপ্তরি। ছেলে কিরণ টঙ্গীর একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। শ্রমিক থেকে হন টঙ্গী পৌরসভার কমিশনার। এরপর খুলে যায় তার ভাগ্য। হয়ে যান গাজীপুর সিটির করপোরেশনের টঙ্গী এলাকার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিকবার কাউন্সিলর। টাকা ও ক্ষমতার জোরে কাউন্সিলর হয়েও একাধিকার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে আসাদুর রহমান কিরণ প্রায় পুরো এক […]

নিউজ ডেস্ক

১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:২৪

বাবা নূর মোহাম্মদ ছিলেন স্কুলের দপ্তরি। ছেলে কিরণ টঙ্গীর একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। শ্রমিক থেকে হন টঙ্গী পৌরসভার কমিশনার। এরপর খুলে যায় তার ভাগ্য।

হয়ে যান গাজীপুর সিটির করপোরেশনের টঙ্গী এলাকার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিকবার কাউন্সিলর।
টাকা ও ক্ষমতার জোরে কাউন্সিলর হয়েও একাধিকার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে আসাদুর রহমান কিরণ প্রায় পুরো এক মেয়াদের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।

ক্ষমতা কিরণকে বিপুল টাকার মালিক বানিয়ে দেয়। দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন তিনি।
এমনকি নিউইয়র্ক শহরে তিনটি বিলাসবহুল বাড়ি করে নাগরিকত্বও পেয়েছেন।

গতকাল সোমবার রাতে যশোর জেলার বেনাপোলে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির হাতে আটক হন আসাদুর রহমান কিরণ। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধে গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গীস্থ পাগার এলাকার বাসিন্দা আসাদুর রহমান কিরণের বাবা মরহুম নূর মোহাম্মদ খান ছিলেন একটি স্কুলের দপ্তরি এবং কিরণ ছিলেন একটি কারখানার শ্রমিক। স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে আসাদুর রহমান খান কিরনের রাজনীতির হাতে খড়ি।

২০০০ সালে বর্তমান গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান দ্বিতীয় মেয়াদে টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে, কিরণ রাতারাতি আজমত উল্লাহ খানের ঘনিষ্ঠজন হয়ে যান।

এরপর পর্যায়ক্রমে তিনি টঙ্গী পৌরসভার কমিশনার এবং পরবর্তীতে ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কমিশনার নির্বাচিত হয়েই কিরণ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

২০১৩ সালের প্রথম নির্বাচনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মান্নান ২০১৩ সালে সাময়িক বরখাস্ত হলে আসাদুর রহমান কিরণ বিপুল টাকার বিনিময়ে প্যানেল মেয়র হয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হন। ভারপ্রাপ্ত মেয়র নির্বাচিত হয়ে ২০১৫-২০১৮ মাত্র ২৭ মাসেই তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন।

কিরণ গাজীপুরের টঙ্গীতে তিনটি এবং ভালুকায় ২০০ বিঘা জমিতে ১টি শিল্প কারখানা গড়ে তোলেন।

টঙ্গী এবং উত্তরাতেও একটি বহুতল বাড়ি করে অসংখ্য জমি, ফ্লাটে বিনিয়োগ করেন। তার দায়িত্বকালীন সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন শিল্প কারখানার হোল্ডিং ট্যাক্স জালিয়াতি করে কমিয়ে এবং ঠিকাদারদের থেকে কমিশন বাণিজ্য করে বিভিন্ন সেটেলমেন্ট করে কয়েকশত কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিরণ এবং তার স্ত্রীর নামে যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক শহরে তিনটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক বলে জানা গেছে।

এদিকে ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির দায়ে সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বরখাস্ত হলে কিরণ আবারো বিপুল টাকার বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বলে জানিয়েছেন তারই ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র।

কিরণের দুর্নীতির মধ্যে উত্তরায় ১১ নাম্বার সেক্টরে ৭ নাম্বার রোডে ১০ নম্বর বাড়ি (৭ তলা আলিশান ভবন বর্তমান মূল্য আনুমানিক ১৫ কোটি টাকা) উত্তরায় ৭ নাম্বার সেক্টরে ১৮ নাম্বার রোডে ৯৫ নম্বর ১২ তলা ভবন (নির্মাণাধীন) আনুমানিক মুল্য ৩৫ কোটি টাকা)।

রূপায়ন সিটি উত্তরায় ম্যাজিস্ট্রিক ফেইস ৮ নাম্বার বিল্ডিং এ দুটি লাক্সারিয়াস কন্ডোনিয়াম ফ্ল্যাট, যার আনুমানিক মূল্য ১৬৬০ কোটি টাকা।

এছাড়া ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় নিজের এবং তার স্ত্রীর নামে ২০০ বিঘা জমির ওপর ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ৩০০ কোটি টাকা। রাজধানীর গুলশান ২ এ ৭৯ নাম্বার রোডে ২৫০০ স্কয়ারফিটের আলিশান ফ্ল্যাট রয়েছে কিরণের।

যার আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি টাকা। গাজীপুর সিটি করপোরেশন আওতাধীন টঙ্গী জোনে তার তিনটি ফ্যাক্টরি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৩০০ কোটি টাকা। তাছাড়া টঙ্গীর পাগার, আশুলিয়া এবং গাজীপুরে তার নিজ নামে এবং স্ত্রী, শ্যালক এবং শ্যালিকার নামে ১১২ বিঘা জমি রয়েছে।

টঙ্গীর পাগারে সংখ্যালঘুদের জমি ও মরকুন কবরস্থান দখলেও অভিযোগও কিরণের বিরুদ্ধে। প্রথম মেয়াদে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দুর্নীতি করে পাচার করা টাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে তিনটি বাড়ি করেন। যার আনুমানিক মূল্য ৪০০ কোটি টাকা।

তার নিজ নামে, স্ত্রী, শ্যালক এবং শ্যালিকার নামে এবং ছেলে-মেয়ের নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং বাংলাদেশে বিপুল নগদ অর্থ রয়েছে কিরণের। নিজ নামে, স্ত্রী, শ্যালক এবং শ্যালিকার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের লকারে রক্ষিত ৫০০-৬০০ ভরি স্বর্ণ ও ডায়মন্ড রয়েছে।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালনের নামে কিরণ সিটি করপোরেশনের খরচের তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৭৬ জন কাউন্সিলর এবং কিছু কর্মকর্তাদের পিকনিক আয়োজন করার নামে করপোরেশনের তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা খরচ বাবদ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
গত বছরের ২০ জুলাই দুদকে জমা পড়া অভিযোগ লাল ফিতায় আটকে গেলে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন হয়। গত বছর ২১ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করা হয়।

২৮ ফেব্রুয়ারি আদালত কিরণের দুর্নীতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। হাইকোর্ট চার মাসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে সময় বেঁধে দেন।

একইসঙ্গে গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারিও করেছিল আদালত।

এ বিষয়ে টঙ্গী ও গাজীপুর আওয়ামী লীগের কোনো নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কিরণ ৫ আগস্টের আগে কালের কণ্ঠের এই প্রতিনিধিকে বলেছিলেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। তার যা সম্পদ আছে, সবই বৈধ।

তার কোনো অবৈধ সম্পদ তার নেই। রাজনৈতিক কারণে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান কিরণ।

জাতীয়

ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে নতুন দল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দলটি। মো. নাজিমুল হককে আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নতুন দল জাতীয় সরকারের রূপরেখা ও নতুন মন্ত্রিসভার আনুপাতিক হারের […]

নিউজ ডেস্ক

০৬ মে ২০২৫, ১৪:৪২

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে নতুন দল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দলটি।

মো. নাজিমুল হককে আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নতুন দল জাতীয় সরকারের রূপরেখা ও নতুন মন্ত্রিসভার আনুপাতিক হারের একটি প্রস্তাবও তুলে ধরে। ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, বদিউল আলম মজুমদারকে উপরাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী ও ডা. শফিকুর রহমানকে উপপ্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকারের রূপরেখা প্রস্তাব করেন সভায় উপস্থিত ঐক্য ও সংহতি পরিষদের নেতারা।

এ ছাড়া নতুন মন্ত্রিসভার আনুপাতিক হারও প্রকাশ করেন তারা। তাদের প্রস্তাব অনুসারে, বিএনপি ২৫ শতাংশ, জামায়াত ২০ শতাংশ, এনসিপি ১৫ শতাংশ, ইসলামি আন্দোলন ৫ শতাংশ, বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ১০ শতাংশ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে ২৫ শতাংশ সদস্য নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব পেশ করেন নতুন এ দলটি।

জাতীয়

গেজেটের মেয়াদ শেষ, শপথ নিতে না পাওয়ায় মেয়র পদ হারালেন ইশরাক

সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা উচ্চ আদালতে যাব এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”

গেজেটের মেয়াদ শেষ, শপথ নিতে না পাওয়ায় মেয়র পদ হারালেন ইশরাক

ইশরাক

নিউজ ডেস্ক

২৬ মে ২০২৫, ২২:৩৩

বিএনপি সমর্থিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জয়ী হলেও মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারলেন না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে তা বাতিল বলে গণ্য হয়—এই আইনি সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৪টায়।

শেষ দিনের শপথ নিশ্চিত করতে ইশরাকের আইনজীবী ও রিটকারী পক্ষ মরিয়া চেষ্টা চালান। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী শপথগ্রহণের পথ খুঁজতে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো মতামত আসেনি। এতে শপথের প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি।

এ নিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা উচ্চ আদালতে যাব এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”

ইশরাকের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে তারা লিগাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। রিটকারী পক্ষও হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার কথা বলেছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন এই ইস্যু ঘিরে তুমুল আলোচনা চলছে। বিএনপি এবং ইশরাকের সমর্থকরা বলছেন, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ‘অদৃশ্য এক খেলার’ মাধ্যমে তাকে শপথ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

শেষ মুহূর্তে কিছু নমনীয়তা দেখা গেলেও, আইন মন্ত্রণালয়ের নিরব অবস্থান পুরো প্রক্রিয়াকে স্থবির করে দেয়। ফলে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই শপথ যুদ্ধের শেষ বিজয়ী আসলে কে?

জাতীয়

বাংলাদেশ সীমান্তে আরএসও’র প্রকাশ্য সশস্ত্র মহড়া

বাংলাদেশের ভেতরে, নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের ক্রোক্ষ্যং চাক পাড়ায় প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া চালিয়েছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)।সামরিক কায়দায় কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সদস্যদের এই মিছিল দেশবাসীর মনে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং সীমান্তে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি চলমান কর্মকাণ্ডের অংশ। স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমান্তের ভেতর প্রবেশ […]

বাংলাদেশ সীমান্তে আরএসও’র প্রকাশ্য সশস্ত্র মহড়া

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০১ মে ২০২৫, ১৮:২৬

বাংলাদেশের ভেতরে, নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের ক্রোক্ষ্যং চাক পাড়ায় প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া চালিয়েছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)।
সামরিক কায়দায় কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সদস্যদের এই মিছিল দেশবাসীর মনে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং সীমান্তে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি চলমান কর্মকাণ্ডের অংশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমান্তের ভেতর প্রবেশ করে আরএসও গোষ্ঠীর সদস্যরা শুধু মহড়াই চালাচ্ছে না, বরং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর জোরপূর্বক চাঁদা আদায়, আটক ও নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রতিনিয়ত তারা সীমান্তবর্তী এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে দুর্বল, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের টার্গেট করছে।

সম্প্রতি একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আরএসও এবং আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ)-এর হাতে সীমান্তে অন্তত ১২টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি নিয়ন্ত্রণ করছে আরএসও এবং ৪টি এআরএ। প্রতিটি চেকপোস্টে ৩-৫ জন করে সশস্ত্র সদস্য নিয়োজিত রয়েছে, যারা নিয়মিত চাঁদা আদায়ে জড়িত।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস জানায়, এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী বাংলাদেশের ভেতরে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, পাচার এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

সংস্থাটি একে যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে আখ্যায়িত করেছে এবং বাংলাদেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, সীমান্তে আরএসও’র এই তৎপরতার পাশাপাশি পাহাড়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউপিডিএফ’র মধ্যে গোপন বৈঠকের তথ্যও পাওয়া গেছে। একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য কেএনএফকে প্রাথমিকভাবে অর্থ সহায়তাও দেওয়া হয়েছে।

এর পাশাপাশি সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিষিদ্ধ ঘোষণা ও রাখাইনের জন্য কথিত ‘মানবিক করিডোর’ চালুর আলোচনা সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল একটি ‘রিফিউজি ইস্যু’ নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত সীমান্ত রাজনীতি যা বাংলাদেশকে এক অদৃশ্য যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।