বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে সীমান্ত পয়েন্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে কিছু লোককে অননুমোদিতভাবে ঠেলে দেওয়ার (পুশ ইন) বিষয়টি গৃহীত প্রক্রিয়ার বাইরে ঘটেছে এবং এটি একটি অগ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। তিনি এই কার্যক্রমকে “অন্যায্য” আখ্যা দিয়ে বলেন, এমন সংবেদনশীল বিষয়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগে আনুষ্ঠানিক চ্যানেল অনুসরণ করাই শ্রেয়।
বুধবার (৮ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. খলিলুর রহমান সীমান্ত ইস্যুতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসা ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমরা প্রতিটি ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করছি। শুধুমাত্র প্রমাণিত বাংলাদেশি নাগরিকদেরই ফেরত নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, এই বিষয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তিনি জানান, “বিষয়টি আমরা অস্বীকার করছি না—বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশের বিষয়টি উঠে এসেছে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই হওয়া উচিত।”
এদিকে, পুলিশ সদর দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন,
“এই প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশের নিরাপত্তা যাতে কোনোভাবে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।”
একই দিনে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন ড. খলিলুর রহমান। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো এক বিবৃতিতে বলেন,
“বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দুই রাষ্ট্রকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা সংযম প্রদর্শনের অনুরোধ জানাই এবং আশা করি উত্তেজনা কূটনৈতিক মাধ্যমে নিরসন হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও জনগণের কল্যাণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় এবং বিশ্বাস করে যে শান্তি ও সংলাপের মাধ্যমে যেকোনো সংকট সমাধান সম্ভব।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত প্রায় ৩০টি জেলার সঙ্গে যুক্ত, যেখানে নিরাপত্তা ও অভিবাসন বিষয়ক নানা জটিলতা প্রায় সময়ই আলোচনায় উঠে আসে। এই পটভূমিতে সর্বশেষ পুশ ইন পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?