সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
২৮ পৌষ, ১৪৩১

পরিক্ষামূলক সংস্করণ

জাতীয়

জাদুঘরে ‘আয়নাঘরের রেপ্লিকা’ রাখার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশঃ ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২:১০

জাদুঘরে ‘আয়নাঘরের রেপ্লিকা’ রাখার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্মম নির্যাতনের বার্তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে গণভবন জাদুঘরে ‘আয়নাঘরের রেপ্লিকা’ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছেন।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা গণভবন পরির্দশনকালে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেন। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

উপ-প্রেসসচিব বলেন, গত ১৫ বছরে গণভবন স্বৈরশাসকের নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন ও নৃশংসতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।

এ সময়ে আরো যত নির্যাতন হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম আয়নাঘর। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন- গণভবনে যদি আয়নাঘরের রেপ্লিকা রাখা যায়, তাহলে স্বৈরশাসকের নির্যাতনের বিষয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরো ভালোভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে। এ জন্য অধ্যাপক ইউনূস গণভবন পরিদর্শনকালে সেখানে আয়নাঘরের রেপ্লিকা রাখার নির্দেশ দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনেকে গণভবন দেখতে যাবেন।

 

জাদুঘর পরিদর্শনকালে দেশবাসী যেন জানতে পারে যে আয়নাঘরে কী ধরনের নির্মম নির্যাতন করা হতো। অধ্যাপক ইউনূস জুলাই-আগস্ট বিপ্লব স্মরণে গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, দ্রুত কাজ শেষ করতে প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে।
এখনো কেউ কেউ নিখোঁজ আছেন, তাদের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ কী, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, গুমের বিষয়ে সরকার একটা কমিশন গঠন করেছে।

তারা এ বিষয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা যেমন অধিকার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং দেশের বাইরের সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশল তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানিয়েছে- নিখোঁজের খবর আগে যেটি ছিল, প্রকৃতপক্ষে নিখোঁজের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। অনেকে ভয়ে বলেননি যে তার ভাই, স্বামী বা সন্তান নিখোঁজ ছিল। এখন তারা নিখোঁজের তথ্য জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, কমিশনের সদস্যরা এ নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কাজ করছেন।

গুমের নতুন কোন তথ্যসহ তাদের কাজে অগ্রগ্রতি হলে সংবাদমাধকে জানানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গুম হওয়া পরিবারগুলোকে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে কি না, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে আজাদ মজুমদার বলেন, গুমের বিষয়ে যে কমিশন কাজ করছে, তাদের সুপারিশের আলোকে সরকার এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কোনো বাহিনীকে এককভাবে দায়ী করা হয়নি। শুধু গুমের সঙ্গে যারা সুস্পষ্টভাবে জড়িত, সেটি একক বা সামষ্টিক পর্যায়ে যেভাবে হোক না কেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

রাষ্ট্রপতি অপসারণের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, সরকার রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আজাদ মজুমদার জানান, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে আপাতত সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরো খবর