বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
৮ মাঘ, ১৪৩১

পরিক্ষামূলক সংস্করণ

জাতীয়

রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশঃ ২২ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৪৩

রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

এদিকে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ দাবিতে বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে ছাত্র-জনতা। কর্মসূচি থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনের সামনে থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীরা বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকুন। তাই আমরা তাকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি তিনি যেন রাষ্ট্রপতির পথ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা জানি তাকে কীভাবে পথ থেকে সরাতে হবে। ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামে কাজ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে বাহার উদ্দিন নামে একজন বলেন, রাষ্ট্রপতি চুপ্পু যে পর্যন্ত তার পদ থেকে পদত্যাগ না করবেন সে পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। চুপ্পু একজন মিথ্যাবাদী। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না কোনো স্বৈরাচারের দোসর এই পদে থাকুক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে মো. সোহাগ বলেন, আমরা দেখতে চাই চুপ্পু কতদিন বঙ্গভবনে থাকতে পারে। ছাত্র আন্দোলনের আহতরা পথে পথে আর দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পু কেন বঙ্গভবনে আরাম-আয়েশ করবে। এই রাষ্ট্রপতি ভারতের দালাল এবং সে শেখ হাসিনার দোসর।

এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চ নামের ব্যানারে আরেকটি সংগঠনের অর্ধশত লোকজন বঙ্গভবনের সামনে হাজির হয়ে বলেন, আমরা চাই বর্তমান রাষ্ট্রপতি যেন দ্রুত পদত্যাগ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ইতোমধ্যে বঙ্গভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এপিসি, জলকামান।

সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গভবনের সামনের মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও বক্তব্য দিচ্ছেন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির ব্যানারে আসা বিক্ষুব্ধ জনতা। পাশেই আরেকটি স্বৈরাচারের দোসর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে ‘রক্তিম জুলাই-২০২৪’ ব্যানারে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় অর্ধশত জনতাকে।

বঙ্গভবন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ডিএমপি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বঙ্গভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য। সে অনুযায়ী বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। অপ্রীতিকর কিছু যাতে না ঘটে সেজন্য স্থানীয় থানা পুলিশের পাশাপাশি সহযোগিতায় রয়েছে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে গণজমায়েত। গণজমায়েতের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুকে এক পোস্ট থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

পোস্টে ছাত্রলীগকে তিনি ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বর্ণনা করে নিষিদ্ধের দাবি জানান। এছাড়া নিজের পোস্টে রাষ্ট্রপতিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ অ্যাখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।

সম্প্রতি মানজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, তার কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। এ নিয়ে সোমবার দিনভর নানা বিতর্ক ও সমালোচনা চলে দেশজুড়ে।

এরপর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রপতির পদে তার থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদিও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি মীমাংসিত বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকুন।

এ সম্পর্কিত আরো খবর