অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সাক্ষাৎকালে সেনাপ্রধান দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে সেনাবাহিনীর গৃহীত কার্যক্রম এবং জাতীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। বিশেষ করে লঞ্চ টার্মিনাল, বাস ও রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী যে তৎপরতা চালাচ্ছে, তা তুলে ধরেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
তিনি জানান, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলগুলোতে শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে বোঝাপড়া সৃষ্টি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আইএসপিআর আরও জানায়, সেনাপ্রধান জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের সম্মানে দেশের সব সেনানিবাসে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। এছাড়া আহত ও শহীদ যোদ্ধাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রমও সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সাক্ষাৎ শেষে সেনাপ্রধান প্রধান উপদেষ্টাকে আগাম ঈদ শুভেচ্ছা জানান।
অধ্যাপক ড. ইউনূস সেনাবাহিনীর পেশাদারি, নিষ্ঠা ও দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির দুর্দিনে যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে, তা দেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। আপনারা দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা সমগ্র জাতির জন্য গর্বের।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনায় এবং জনকল্যাণে সেনাবাহিনী আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। সরকার সেনাবাহিনীর যেকোনো প্রয়োজনীয় সহযোগিতায় পাশে থাকবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সাক্ষাৎ শুধু ঈদ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে সামরিক নেতৃত্বের সক্রিয় ভূমিকার প্রতিফলন। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর পারস্পরিক আস্থা ও সমন্বয় আরও জোরদার হলো।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?