বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল চীনের অন্যতম প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিকেইউ) এক গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা প্রদান করবেন। এই বক্তৃতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে জানিয়েছেন, অধ্যাপক ইউনূস আগামীকাল সকাল ১০টার দিকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই অনুষ্ঠানে তাকে চীনের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হবে, যা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূসের এই সফরকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কারণ এটি কেবলমাত্র শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রেই নয়, বরং দুই দেশের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। চীন বরাবরই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী এবং সম্প্রতি দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অধ্যাপক ইউনূসের বক্তৃতা কেবলমাত্র পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষামূলক বিষয়ই নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দেবে। বিশেষত, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক ব্যবসা ও টেকসই উন্নয়নের মডেল নিয়ে তার বক্তব্য চীনের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।
এদিকে, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ইউনূসের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গেছে, এই ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানে চীনের উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ও একাডেমিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত থাকবেন।
অধ্যাপক ইউনূসের এই বক্তৃতা চীনের শিক্ষাবিদদের পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদের কাছেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কেননা, তিনি বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করবেন যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও শিক্ষণীয় হতে পারে।
এই সফরের মাধ্যমে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, দুই দেশের মধ্যে গবেষণা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূসের এই সফর সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার বক্তব্য এবং পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি উভয় দেশকেই আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের মডেল বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে।
এদিকে, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা প্রদান শেষে অধ্যাপক ইউনূসের আগামীকালই দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তার এই সফরের ফলাফল সম্পর্কে বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছে।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?