বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শহীদ পরিবারগুলো স্পষ্টভাবে তাদের দাবিগুলো উত্থাপন করেছে। তাদের মতে, দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আগে অবশ্যই গণহত্যার বিচার এবং রাজনৈতিক সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
তারা মনে করে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।
শহীদ পরিবারের সদস্যরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, তারা কোনোভাবেই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে নন।
তাদের অভিযোগ, সরকারদলীয় বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, যা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক ভয়ানক অপরাধ।
তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছেন, বাংলাদেশে যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও রক্তক্ষয়ী সংঘাত দেখা দিতে পারে। এজন্যই তারা প্রথমে হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।
শহীদ পরিবারের সদস্যদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হলো রাজনৈতিক সংস্কার। তারা মনে করেন, বর্তমান শাসনব্যবস্থার কাঠামো পরিবর্তন করা না হলে বারবার স্বৈরাচারী সরকার আসবে এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করবে। এজন্য তারা সংবিধান সংস্কার, নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে, তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। তাদের মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলটি বারবার মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে, হত্যা-গুমের রাজনীতি চালিয়েছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করেছে। তাই দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত, যেন বাংলাদেশ আর কখনো একদলীয় শাসনের কবলে না পড়ে।
শহীদ পরিবারগুলোর ভাষায়, “আগে গণহত্যার বিচার, তারপর নির্বাচন।” তারা কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন চায় না, বরং অপরাধীদের শাস্তি ও সুশাসন নিশ্চিত করার পরই নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন।
তারা তাদের এই দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং দেশবাসীকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শহীদ পরিবারগুলো রাজপথ ছাড়বে না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?