অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৫ মার্চ মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করবেন। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই মর্যাদাপূর্ণ পদক বিতরণ অনুষ্ঠিত হবে। তথ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা হিসেবে বিবেচিত। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এবার সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি তাদের অসামান্য অবদানের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫-এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। গত ১১ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই মনোনীত ব্যক্তিদের তালিকা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে।
পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের জন্য অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর)। তিনি তাঁর গবেষণা ও জ্ঞানভিত্তিক কাজের মাধ্যমে দেশকে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। সাহিত্যে মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন কিংবদন্তি লেখক মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ, যিনি তাঁর সাহিত্যকর্মে জাতীয় চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।
সংস্কৃতিতে মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন বাংলাদেশের ভাস্কর্য শিল্পের অগ্রদূত নভেরা আহমেদ। তাঁর সৃষ্টিকর্ম দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। সমাজসেবায় মরণোত্তর পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ, যিনি ব্র্যাক-এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দারিদ্র্য বিমোচন ও শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান। তিনি স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশের সঙ্গীত জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন এবং গণমানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। শিক্ষা ও গবেষণায় পুরস্কার পাচ্ছেন বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর, যিনি শিক্ষা ও রাজনৈতিক গবেষণায় নিজের অসামান্য অবদান রেখেছেন।
এছাড়াও প্রতিবাদী তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ। তাঁর বিদ্রোহী চেতনা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে নির্ভীক অবস্থান তাকে তরুণ প্রজন্মের জন্য আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি প্রদানে সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করেছেন, তাদেরকে এই স্বীকৃতি প্রদান সম্মাননা ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমে আরো নতুন উদ্যমে কাজ করার উৎসাহ যোগাবে।
স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষে পুরস্কারপ্রাপ্তদের আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তাদের সম্মাননা গ্রহণের সাক্ষী হবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হবে, কারণ তিনি নিজেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করেছেন। দেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
অনুষ্ঠানটি সফলভাবে আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?