বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) একটি চীনা কোম্পানি ১ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। এই বিনিয়োগ দেশের শিল্পোন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মোংলা ইপিজেড বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল, যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবিধাজনক অবকাঠামো ও ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। চীনা এই কোম্পানির বিনিয়োগ মূলত উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহৃত হবে, যা রপ্তানিমুখী শিল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিনিয়োগ দেশের তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, প্রযুক্তি এবং বিভিন্ন হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি, এটি বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের পরিধি আরও বৃদ্ধি করবে, যা অর্থনীতিকে আরও স্থিতিশীল করতে সহায়ক হবে।
এই বিনিয়োগের ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বিশেষ করে স্থানীয় দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হচ্ছে, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সহায়তা করছে।
এছাড়া, এই বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রযুক্তি স্থানান্তর ও নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। চীনা কোম্পানির এই উদ্যোগ স্থানীয় শিল্পের বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিদ্যমান। চীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম দেশ। এই বিনিয়োগ শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং কৌশলগত দিক থেকেও এটি বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।
বাংলাদেশ সরকারও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজতর করা, কর প্রণোদনা প্রদান এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন। মোংলা ইপিজেডে চীনা কোম্পানির বিনিয়োগ এই প্রচেষ্টারই একটি সফল উদাহরণ।
মোংলা ইপিজেডে চীনা কোম্পানির ১ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক। এটি শুধু শিল্প খাতের উন্নয়নই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সরকারের নীতি সহায়তা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, যা দেশের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?