অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, পাচার হওয়া কয়েকশ’ কোটি টাকা চলতি বছরেই দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সচিবালয়ে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যরা অংশ নেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. সালেহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তরণের বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হবে। তার মতে, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এই উত্তরণ বিলম্বিত করা হলে দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুবিধা হতে পারে।
রবিবার মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে সংকটকাল অতিক্রম করছে। আন্তর্জাতিক সূচকের ভিত্তিতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে কিছু সন্দেহ রয়েছে, যা সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। তার মতে, এলডিসি উত্তরণ বিলম্বিত করা হলে বাণিজ্যিক সুবিধাগুলো আরও দীর্ঘ সময় ধরে পাওয়া যাবে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক হতে পারে।
এছাড়া, বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জানান, সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলা করা। বিশেষ করে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করার বিষয়টি সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অব্যবস্থাপনা ও ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার সুস্পষ্ট নীতিগত কাঠামো গ্রহণ করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হবে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং আইনি কার্যক্রমের গতির ওপর।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?