জুলাই গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন সংস্থটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
আজ বুধবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এই তদন্ত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হয়।
এ সময় ভলকার তুর্ক বলেন, জুলাই গণহত্যায় ব্যাপক ও সংগঠিতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। নারীর প্রতিও সহিংসতা হয়েছে।
অনেক শিশু ও তরুণ আছে যারা সারাজীবনের জন্য বিকলাঙ্গ হয়ে গেছে। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদন তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকার পুরোপুরি সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করবে কমিশন।
তিনি আরও বলেন, হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলকে নিয়মিত আপডেট জানানো হবে। এ ব্যাপারে ড. ইউনূসও ব্যক্তিগতভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। বাংলাদেশের জন্য এটি বিরাট সুযোগ। সব ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণহত্যার বিচারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি বেশ কিছু সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। তবে এই সংস্কার বাস্তবায়ন বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়বদ্ধ। শুধু এই প্রতিবেদনই বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কাজ শেষ হয়ে যাবে না। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সব নাগরিকের মানবাধিকারও নিশ্চিত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম চলছে। এরইমধ্যে ঐক্যমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। কয়েকটি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তবে অধিকাংশ ঘটনার পেছনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরাই দায়ী। সরকার এমন ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থন করে না।
সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে বললে তা একপেশে বক্তব্য হবে। সংখ্যালঘুর চেয়ে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় মুসলমান ভুক্তভোগীর সংখ্যাই বেশি।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন। তাতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই অভ্যুত্থানের সময় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছরের ১৯ জুলাই জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে শেখ হাসিনা আন্দোলনের সমন্বয়কদের গ্রেফতার করে মেরে ফেলা ও গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্তাদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল কোর কমিটি। ২০ জুলাই থেকে নিয়মিত বৈঠক করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?