র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানীসহ সারাদেশে র্যাবের টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে রাজধানীতে ৬৯টি টহল, ঢাকার বাইরে ১৪৯টি টহলসহ সারাদেশে মোট ২১৮টি টহল মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে র্যাবের গোয়েন্দা দল বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে, যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত থেকে সারাদেশে র্যাবের বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো যে কোনো ধরনের নাশকতা, সহিংসতা প্রতিরোধ করা এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। র্যাব জানিয়েছে, বিশেষ নজরদারির অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে এবং অপরাধীদের ধরতে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। এ কারণে র্যাবের সাইবার ইউনিট যেকোনো ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট, গুজব বা ভুল তথ্য প্রচারের বিষয়ে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাই ও সহিংস ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের সদস্যরা দিনরাত টহল দিচ্ছেন এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে র্যাবের এমন অভিযানে সাধারণ মানুষ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এ ধরনের অভিযান দীর্ঘমেয়াদে অপরাধ দমনে সহায়ক হবে, তবে কিছু ক্ষেত্রে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানির আশঙ্কাও রয়েছে।
এ বিষয়ে র্যাবের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা যেকোনো মূল্যে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শুধু অভিযান পরিচালনা করলেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না, বরং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে টার্গেটেড অভিযান চালানো দরকার।
এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতের বেলা অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই অভিযানের ফলে সামগ্রিকভাবে অপরাধ দমনে কী পরিমাণ সফলতা আসবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে র্যাবের কঠোর অবস্থান ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, অপরাধীদের দমনে প্রশাসন কোনো ছাড় দেবে না।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?