বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়েও পৌঁছেছে। তার শাসনকাল শুরু থেকেই দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে বিরোধিতা এবং প্রশংসা দুইই ছিল।
তবে, সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি রিপোর্ট শেখ হাসিনার শাসনকালের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে সামনে এনেছে, যা রাজনৈতিকভাবে তার পক্ষে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের জনগণের উপর নির্মম নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, সরকারের সমালোচনা করার জন্য বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়, নির্যাতন এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
এই রিপোর্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে শেখ হাসিনার শাসনকাল এবং তার সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষত ২০১৩ সালের পর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ করার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশি শক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি, বিরোধী দলের সমাবেশে বর্বর হামলা এবং আটক আটক করা হয়েছে।
এমনকি মানবাধিকার কর্মীদেরও ভয় দেখানো হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে।
এই রিপোর্টের ফলে শেখ হাসিনার সরকার আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে সমালোচনার শিকার হতে পারে, বিশেষ করে মানবাধিকার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া দেশগুলোর পক্ষ থেকে। জাতিসংঘের রিপোর্টটি এমন একটি সময়ে প্রকাশিত হয়েছে, যখন দেশের ভেতরেও তার সরকার নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে।
বিশেষত, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিরোধীদের দাবি, ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই, এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ব্যাপক কারচুপি হয়েছে।
এটি অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কফিনে ঠুকে দেওয়া শেষ পেরেক হতে পারে। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তার শাসন ব্যবস্থার প্রতি দেশের ভেতর এবং বাইরের মানুষের বিশ্বাসে ফাটল পড়তে পারে।
এমনকি, জাতিসংঘের রিপোর্টের পর বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসায়, সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?