শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

জাতীয়

রাষ্ট্র সংস্কারে সহায়তা দিতে চান সাবেক সেনা কর্মকর্তারা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও। শেখ হাসিনার পতনের জন্য তারাও মিছিল-সমাবেশ করেছেন। চাকরিতে থাকা বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্যরাও ওই আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনেও সহযোগিতা করতে চান তারা। শনিবার রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন […]

নিউজ ডেস্ক

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০১

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও। শেখ হাসিনার পতনের জন্য তারাও মিছিল-সমাবেশ করেছেন। চাকরিতে থাকা বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্যরাও ওই আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনেও সহযোগিতা করতে চান তারা।

শনিবার রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) আয়োজিত ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান এবং বিপ্লবোত্তর ভূমিকা’ বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সেমিনারের সহযোগিতায় ছিল ‘রাওয়া রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি ফোরাম’ (আরআরএসএফ)।

অনুষ্ঠানে আরআরএসএফ’র রিসার্চ ডাইরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. নাসিমুল গনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত দেশ গড়তে দেশপ্রেমিক, নিবেদিত মানুষ এবং সঠিক তদারকি প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এই বিপ্লবী সরকার ও ছাত্র-জনতা কী চাচ্ছে এটা পরিষ্কার করতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ জনগণ, ছাত্র এবং সশস্ত্র বাহিনী কী ভূমিকা পালন করবে তা নিশ্চিত করতে হবে। এখন প্রয়োজন দেশপ্রেমিক নিবেদিত একদল মানুষ। সশস্ত্র বাহিনী গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সম্পৃক্ত হতে পারে।

দেশ সংস্কার কাজে চার জায়গা থেকে জনবল নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি অফিসার, প্রবাসী এবং বিদেশ থেকে সংশ্লিষ্টদের দিয়ে সংস্কার কাজ করা সম্ভব।

অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে মো. নাসিমুল গনি বলেন, বিগত সরকার সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় মেধাহীন নিয়োগ দিয়ে নৈরাজ্য তৈরি করেছে। অনেক সংকট ও ৪০ লাখ মামলা রেখে গেছে। এখনো প্রতিবিপ্লবের জন্য টাকা ছড়ানো হচ্ছে। চিহ্নিত অপরাধীদের ভাসানচর নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

গণঅভ্যুত্থানের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অগ্রভাগে ছিল বলে দাবি করে লে. কর্নেল মোশাররফ বলেন, সাবেক ও বর্তমান সৈনিক থেকে সব স্তরের কর্মকর্তারা এই সফলতার অংশীদার। অথচ অভ্যুত্থানের এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা অবহেলিত।

লে. কর্নেল মোশাররফ বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গণঅভ্যুত্থানে দুভাবে ভূমিকা রেখেছেন। অবসরপ্রাপ্তরা সরাসরি মাঠে নেমেছেন এবং চাকরিরতরা চূড়ান্ত সময়ে অবদান রেখেছেন। আবু সাইদ হত্যার পর সেনাবাহিনীর সব স্তরের সদস্যরা মাঠে নামেন। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তারা প্রতিবাদ ও জনসংযোগ শুরু করেন। ১৮ জুলাই মিরপুর ডিওএইচএস থেকে প্রতিবাদের সূচনা হয়। এটাই সর্বপ্রথম সশরীরে আন্দোলন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ বলেন, বিগত সময়ে সামরিক বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বহু চেষ্টা হয়েছে। এর মধ্যে একটা হচ্ছে, বিডিআরের ঘটনা। ৫৭ জন অফিসার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। তার বিচার করা হয়নি। আয়না ঘরের বিচার শুরু করা হয়নি। এগুলো কিন্তু করতে হবে। এইসব মহা অপরাধের বিচার যদি না হয় এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত, কুশীলব যারা ছিল, তাদের যদি বিচারের আওতায় আনা না যায় এবং প্রাপ্য শাস্তি যদি না দেওয়া যায় তাহলে বারবার আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপদগ্রস্ত হতে থাকবে।

অধ্যাপক ড. শহীদুজ্জামান বলেন, আমার মনে হয় এটা আল্লাহতায়ালার অশেষ মেহেরবানি যে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে একটা স্থায়ী উপস্থিতি ঘটাবার আগে আমরা আমাদের বাস্তবতায় ফিরে আসতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, আমি যখনই টিভি টকশোতে যাই, আমি কখনো বলি না আওয়ামী লীগ সরকার। আমি সব সময় বলি টেরোরিস্ট রেজিম। টেরোরিজমের যে সংজ্ঞা সেখানে আওয়ামী লীগ পুরোপুরি মিলে যায়। তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা একটি টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন। তারা তিনবার টেরোরিস্ট কায়দায় ক্ষমতা দখল করেছিল।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ঠিক করার ওপর গুরুত্বারোপ করে লেফট্যানেন্ট (অব.) আবু রুশদ বলেন, আমাদের কয়েকশ অফিসার বিনা কারণে, রাজনৈতিক কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছে, তাদের মধ্যে ট্রেনিংপ্রাপ্ত এবং অভিজ্ঞ অনেক অফিসার আছেন। তাদের বিভিন্ন জায়গায় চুত্তিভিক্তিক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। তারপর ধীরে ধীরে অন্যদের ট্রেনিং দিয়ে এইসব জায়গায় বসান। তাহলে হয়তো আমরা এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক করতে পারব।

ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, আপনাদের বিপ্লবোত্তর ভূমিকা নিয়ে যেটা বলেছেন, আমি অবশ্যই তার সঙ্গে একমত। এই বড় ওয়ার্কফোর্স যারা আছেন, অফিসার্স, জেসিও সৈনিকসহ যারা সক্ষম তাদের কাজে লাগাতে হবে। এবং আমাদের এটা করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র ছিল মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি আমাদের অত্যন্ত পাওয়ারফুল একটা আর্মড ফোর্সেস থাকতে হবে। এটা না হলে এই সময় ও ভবিষ্যতের পৃথিবীতে আমরা বড় বিপদে থাকবো। এক্ষেত্রে রাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।

লে. কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ানের সঞ্চালনায় জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে শাহাদাতবরণকারী সব শহিদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এতে সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন সাবেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে তাদের মধ্যে থেকে বেশ কয়েকজন আগামী দিনের করণীয় বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ও নানা দাবি জানান।

জাতীয়

ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে নতুন দল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দলটি। মো. নাজিমুল হককে আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নতুন দল জাতীয় সরকারের রূপরেখা ও নতুন মন্ত্রিসভার আনুপাতিক হারের […]

নিউজ ডেস্ক

০৬ মে ২০২৫, ১৪:৪২

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে নতুন দল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দলটি।

মো. নাজিমুল হককে আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নতুন দল জাতীয় সরকারের রূপরেখা ও নতুন মন্ত্রিসভার আনুপাতিক হারের একটি প্রস্তাবও তুলে ধরে। ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, বদিউল আলম মজুমদারকে উপরাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী ও ডা. শফিকুর রহমানকে উপপ্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকারের রূপরেখা প্রস্তাব করেন সভায় উপস্থিত ঐক্য ও সংহতি পরিষদের নেতারা।

এ ছাড়া নতুন মন্ত্রিসভার আনুপাতিক হারও প্রকাশ করেন তারা। তাদের প্রস্তাব অনুসারে, বিএনপি ২৫ শতাংশ, জামায়াত ২০ শতাংশ, এনসিপি ১৫ শতাংশ, ইসলামি আন্দোলন ৫ শতাংশ, বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ১০ শতাংশ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে ২৫ শতাংশ সদস্য নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব পেশ করেন নতুন এ দলটি।

জাতীয়

গেজেটের মেয়াদ শেষ, শপথ নিতে না পাওয়ায় মেয়র পদ হারালেন ইশরাক

সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা উচ্চ আদালতে যাব এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”

গেজেটের মেয়াদ শেষ, শপথ নিতে না পাওয়ায় মেয়র পদ হারালেন ইশরাক

ইশরাক

নিউজ ডেস্ক

২৬ মে ২০২৫, ২২:৩৩

বিএনপি সমর্থিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জয়ী হলেও মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারলেন না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে তা বাতিল বলে গণ্য হয়—এই আইনি সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৪টায়।

শেষ দিনের শপথ নিশ্চিত করতে ইশরাকের আইনজীবী ও রিটকারী পক্ষ মরিয়া চেষ্টা চালান। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী শপথগ্রহণের পথ খুঁজতে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো মতামত আসেনি। এতে শপথের প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি।

এ নিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা উচ্চ আদালতে যাব এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”

ইশরাকের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে তারা লিগাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। রিটকারী পক্ষও হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার কথা বলেছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন এই ইস্যু ঘিরে তুমুল আলোচনা চলছে। বিএনপি এবং ইশরাকের সমর্থকরা বলছেন, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ‘অদৃশ্য এক খেলার’ মাধ্যমে তাকে শপথ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

শেষ মুহূর্তে কিছু নমনীয়তা দেখা গেলেও, আইন মন্ত্রণালয়ের নিরব অবস্থান পুরো প্রক্রিয়াকে স্থবির করে দেয়। ফলে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই শপথ যুদ্ধের শেষ বিজয়ী আসলে কে?

জাতীয়

বাংলাদেশ সীমান্তে আরএসও’র প্রকাশ্য সশস্ত্র মহড়া

বাংলাদেশের ভেতরে, নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের ক্রোক্ষ্যং চাক পাড়ায় প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া চালিয়েছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)।সামরিক কায়দায় কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সদস্যদের এই মিছিল দেশবাসীর মনে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং সীমান্তে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি চলমান কর্মকাণ্ডের অংশ। স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমান্তের ভেতর প্রবেশ […]

বাংলাদেশ সীমান্তে আরএসও’র প্রকাশ্য সশস্ত্র মহড়া

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০১ মে ২০২৫, ১৮:২৬

বাংলাদেশের ভেতরে, নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের ক্রোক্ষ্যং চাক পাড়ায় প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া চালিয়েছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)।
সামরিক কায়দায় কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সদস্যদের এই মিছিল দেশবাসীর মনে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং সীমান্তে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি চলমান কর্মকাণ্ডের অংশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমান্তের ভেতর প্রবেশ করে আরএসও গোষ্ঠীর সদস্যরা শুধু মহড়াই চালাচ্ছে না, বরং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর জোরপূর্বক চাঁদা আদায়, আটক ও নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রতিনিয়ত তারা সীমান্তবর্তী এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে দুর্বল, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের টার্গেট করছে।

সম্প্রতি একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আরএসও এবং আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ)-এর হাতে সীমান্তে অন্তত ১২টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি নিয়ন্ত্রণ করছে আরএসও এবং ৪টি এআরএ। প্রতিটি চেকপোস্টে ৩-৫ জন করে সশস্ত্র সদস্য নিয়োজিত রয়েছে, যারা নিয়মিত চাঁদা আদায়ে জড়িত।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস জানায়, এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী বাংলাদেশের ভেতরে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, পাচার এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

সংস্থাটি একে যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে আখ্যায়িত করেছে এবং বাংলাদেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, সীমান্তে আরএসও’র এই তৎপরতার পাশাপাশি পাহাড়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউপিডিএফ’র মধ্যে গোপন বৈঠকের তথ্যও পাওয়া গেছে। একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য কেএনএফকে প্রাথমিকভাবে অর্থ সহায়তাও দেওয়া হয়েছে।

এর পাশাপাশি সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিষিদ্ধ ঘোষণা ও রাখাইনের জন্য কথিত ‘মানবিক করিডোর’ চালুর আলোচনা সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল একটি ‘রিফিউজি ইস্যু’ নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত সীমান্ত রাজনীতি যা বাংলাদেশকে এক অদৃশ্য যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।