জাতীয় নাগরিক কমিটি আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, যখন দেশে “বাংলা ব্লকেড” কর্মসূচি চলছিল, তখন দেশের বাইরে থাকা রেমিট্যান্স যোদ্ধারা “রেমিট্যান্স শাটডাউন” কর্মসূচি পালন করেছেন। এই ত্যাগ ও প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশের মানুষ চিরকাল তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে সংগঠনটির ডায়াসপোরা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসী লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও কনোক সারোয়ারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সারজিস আলম বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ডায়াসপোরা কমিউনিটির অবদান আমরা অন্তরের অন্তস্থল থেকে স্মরণ করতে চাই। তারা শুধু প্রবাসী নন, তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, ইলিয়াস ভাই, পিনাকী দাদা, কনোক সারোয়ার—এই তিনজনের মতো আরও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, যারা রেজিমের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে সোচ্চার ছিলেন এবং এখনও আছেন। তারা তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে কথা বলেছেন, তথ্য তুলে ধরেছেন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সংকটকে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনে ডায়াসপোরা কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। শুধু অর্থনৈতিক অবদান নয়, রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণ ও উন্নয়নে তাদের ভূমিকা আরও জোরদার করা দরকার। যারা দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশকে সমর্থন করেছেন, তাদের শুধু কৃতজ্ঞতা জানানোই যথেষ্ট নয়, বরং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে তাদের যথাযথ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা বছরের পর বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশের জন্য নিবেদিত থেকেছেন, তাদের রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। জাতীয় সংসদেও তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত। কারণ, তারা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও নীতিগত ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। দেশের গঠনমূলক উন্নয়নের জন্য প্রবাসীদের কণ্ঠস্বর ও মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য আগামীর বাংলাদেশে তাদের সক্রিয় ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, অভ্যুত্থান পূর্ববর্তী সময়ে খুনি হাসিনা মিডিয়ার গলা চেপে ধরে রেখেছিল। বিভিন্ন এজেন্সি অলওয়েজ নজরদারি করত। তারা নিউজের শব্দ ও বাক্য ঠিক করে দিত। কিন্তু দেশের বাইরে প্রবাসী ফিল্যান্সার সাংবাদিকেরা সাহস জুগিয়েছেন, খুনি হাসিনার রেজিমের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, প্রবাসী বিষয়ক সম্পাদক এহতেশাম হক প্রমুখ।
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা এবং প্রবাসী বিষয়ক সম্পাদক এহতেশাম হক চার মহাদেশ ও ৩০ দেশের ৭৫ জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় প্রবাসী কমিটি ঘোষণা করেন।
কেন্দ্রীয় প্রবাসী কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- আব্দুর রাকীব সামি, আবু সলমান মুরাদ, আবুল বাশার রহমান, আল আমিন, আলমগীর চৌধুরী আকাশ, আলমগীর হোসেন, এনামুল হক এনাম, দেওয়ান সাহাব-উদদীন, দিলশানা পারুল, ইসরাত জাহান চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম, ফারিয়া ফাহি প্রমুখ।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?