নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : মোঃ তানসেন আবেদীন
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ র্যাবের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের শিকারদের পরিবারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, “র্যাব সৃষ্টির পর থেকে যেসব মানুষ আমাদের সদস্যদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের কাছে আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চাইছি। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর প্রতি আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজন এবং আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁদের লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জের আদালত ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্টের রায়ে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে এবং ১১ জনের দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মহাপরিচালক শহিদুর রহমান বলেন, “আমরা র্যাবের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে চাই এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
সাত খুনের মামলার আপিল এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় দশ বছরেও বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে।
রায়ের পর র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন এবং লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা সহ বেশ কয়েকজন র্যাব কর্মকর্তার শাস্তি বহাল থাকে। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেনও।
সাত খুন হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে র্যাবের বর্তমান ডিজির ‘ক্ষমা চাওয়ার’ প্রসঙ্গে নিহত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, “ক্ষমা চাইলেই তো আর সবকিছুর সমাধান হয়ে যায় না। ওনারা ক্ষমা চাইছেন, এইটা ভালো ব্যাপার।
কিন্তু এই ক্ষমা চাওয়ার চেয়ে বড় হচ্ছে, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা। (সাতখুনের বিচারের) রায়টা যেদিন কার্যকর হবে সেদিনই আমরা স্বস্তি পাবো। যারা এই ধরনের নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা তো ওনাদেরই (র্যাব কর্মকর্তা) দায়িত্ব। এটা করতে পারলেই বরং ওনারা বেশি সম্মানিত হবেন।”