বানৌজা বিশখালি নামের যুদ্ধজাহাজটি তৈরি করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নৌবহরে যুক্ত হয়েছে দেশে তৈরি আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) খুলনার নেভাল বার্থে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান জাহাজটির অধিনায়কের কাছে কমিশনিং (হস্তান্তর) ফরমান তুলে দেন।
নৌবাহিনীতে সদ্য সংযোজিত যুদ্ধজাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫১.৬ মিটার এবং প্রস্থ ৭.৫ মিটার। জাহাজটি ঘণ্টায় ২১ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। এতে রয়েছে একটি ৪০ মি. মি. বফর গান, দুটি ১২.৭ মি. মি. হেভি মেশিনগান, মাইন লেইং রেল, অত্যাধুনিক সারভাইলেন্স রাডার, জিপিএস, ইকো-সাউন্ডার সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জামাদি।
বিশখালী নদীর নামে নামকরণ করা ‘বানৌজা বিশখালী’ জাহাজটি ১৯৭৮ সালে নৌবাহিনীতে কমিশনিংয়ের পর থেকে সব অপারেশনাল কর্মকাণ্ডে সফলতার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। দীর্ঘ ৩৬ বছর দেশের জলসীমার সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকার পর জাহাজটি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে ডি-কমিশন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালে খুলনা শিপইয়ার্ডে নতুন করে জাহাজটি নির্মাণের লক্ষ্যে কিল লেয়িং করা হয়।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সর্বোপরি ভূ-রাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী অপরিহার্য। নৌবহরের সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ এক সুদক্ষ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত জাহাজ ‘বানৌজা বিশখালী’ নৌবাহিনীর সক্ষমতার আর একটি মাইলফলক। নৌবাহিনীর অন্যান্য যুদ্ধজাহাজের মতো এ জাহাজটি দেশের নদী ও সমুদ্রসীমায় চোরাচালান প্রতিরোধ, উপকূলীয় এলাকায় টহল প্রদান, অবৈধ মৎস্য আহরণ প্রতিরোধ, বাণিজ্যিক জাহাজকে জলদস্যুর কবল থেকে নিরাপত্তা প্রদান, মাদকদ্রব্যসহ নিষিদ্ধ বস্তুর অনুপ্রবেশ রোধকরণ, Search and Rescue অপারেশন পরিচালনা করাসহ অন্যান্য অপারেশনাল কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত থেকে দেশ সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
নৌবাহিনী প্রধান বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বন্দরসমূহের নিরাপত্তা প্রদান, সমুদ্র বাণিজ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, ব্লু-ইকোনমি বাস্তবায়নসহ দেশের যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় নৌবাহিনী সবসময় নিবেদিত।
এর আগে অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছলে নৌবাহিনী প্রধানকে খুলনা নৌ অঞ্চল কমান্ডার তাকে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি চৌকশ দল নৌবাহিনী প্রধানকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী সদর দফতরের পিএসও, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক ও অসামরিক বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।