সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে বেআইনিভাবে নেওয়া এক হাজার ২৩২ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে এখনো পড়ে আছে। দেশের উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। আপিল ও রিভিউয়ের পর আবার আপিল আবেদন—আইনের এই সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ এই অর্থ আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত একটি গোয়েন্দা সংস্থা এবং তৎকালীন টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স (টিএফআই) কর্মকর্তারা প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক হাজার ২৩২ কোটি টাকা আদায় করেন।
এই টাকা দুই শতাধিক পে অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের ০৯০০ নম্বর হিসাবে জমা হয়।
জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের সরকার ২০০৭ সালের ১৯ এপ্রিল জেমস ফিনলের কাছ থেকে আদায় করে ১১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ওই টাকা ১৬টি পে অর্ডারে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের কনসোলিডেটেড ফান্ডে প্রথম জমা দেওয়া হয়। এরপর ২২ এপ্রিল একই প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫টি পে অর্ডারের মাধ্যমে আরো ১২০ কোটি ২৪ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হয়।
একই প্রক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে দেড় বছর ধরে বিভিন্ন তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের সংশ্লিষ্ট হিসাবে টাকা জমা হয়েছে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় ছাড়াও ‘অজানা’ উল্লেখ করেও চার দফায় প্রায় ৪৭ কোটি টাকা জমা হয়েছে।
দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের কাছ থেকে কয়েক দফায় বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করা হয়েছে ওই সময়।
বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই আশা করি, এই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওয়ান-ইলেভেনের সরকার অন্যায়ভাবে আইন ও সংবিধানের পরিপন্থী প্রক্রিয়ায় টাকাগুলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের ওই টাকা ফেরত দিয়ে সরকারের উচিত আদালতের নির্দেশনা মানা। একই সঙ্গে যারা টাকা নিয়েছে, তাদের বিচার হওয়া উচিত।