দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনে যাবার দিনক্ষণ আবারও পেছানো হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রথম দফায় পেছানোর পর চলতি বছরের ডিসেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ৫ অগাস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বেশ কয়েক মাস বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তারা। সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরো কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
বছরখানেক আগেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লিসহ মূল অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এমনকি গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানির প্রথম চালানও বুঝে পেয়েছে সরকার। কিন্তু গ্রিড বা সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হয়নি।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুর রশিদ খান বলেন, ‘প্রথম ছয় মাসে কাজের অগ্রগতিও ছিল সন্তোষজনক।
কিন্তু পরে দেশের পরিস্থিতির কারণে সেই ধারা বজায় রাখা সম্ভব হয়নি।
মূলত গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতাকে ঘিরে সারা দেশে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, সেটির জেরেই সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজে ধীরগতি দেখা দেয়। আর ৫ আগস্টের পর কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের উপ-স্কিম পরিচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভারত, সিঙ্গাপুর, তুরস্কসহ অন্য দেশের যেসব নাগরিকরা সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মূল কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, নিরাপত্তা শঙ্কায় তারা সবাই নিজ নিজ দেশে ফিরে যান।
পরের তিন মাস গ্রিড লাইনের নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
এমডি আবদুর রশিদ খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছিলাম। নিরাপত্তা ইস্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অক্টোবরের শেষের দিকে তারা প্রায় সবাই আবারও কাজে যোগ দেয়।
এক লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি বাজেটের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দু’টি ইউনিট বা চুল্লি রয়েছে। এর প্রতিটি ইউনিট প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম বলে জানা যাচ্ছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে প্রথম ইউনিটের গ্রিড লাইনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে জানাচ্ছেন প্রকল্পের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এক্ষেত্রে প্রাথমিক বিভিন্ন পরীক্ষা শেষ করে জ্বালানি লোড করতে দুই মাসের মত সময় প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। এরপর পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে আরো এক মাস সময় লাগবে। এর মানে, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে গ্রিড রেডি হলে থার্ড কোয়ার্টারে, অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের দিকে হয়তো টেস্ট ট্রায়ালে যাওয়া সম্ভব হবে। আর প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় চুল্লি চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করেন ড. মো. জাহেদুল হাছান

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?