মদিনা তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরশে ধন্য। আর চারপাশ ছিল শান্ত ও গম্ভীর, এক নীরব ও প্রশান্ত পরিবেশ। সাহাবিরা নবীজির সান্নিধ্যে বসেছিলেন, হঠাৎ এক অপরিচিত ব্যক্তি প্রবেশ করলেন।
তার পোশাক ছিল ঝকঝকে সাদা, শরীর ছিল পরিচ্ছন্ন, আর কালো চুলগুলো ছিল সুন্দরভাবে আঁচড়ানো। তার চেহারায় ক্লান্তির লেশমাত্র ছিল না। যেন স্বর্গীয় কোনো আলো ছড়িয়ে পড়ছিল তার থেকে। তিনি নবীজির সামনে এসে বসে তার হাঁটুকে নবীজির হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিলেন এবং তার হাত নবীজির উরুর ওপর রাখলেন।
এমন আচরণে সাহাবিরা অবাক হয়ে গেলেন। কে এই ব্যক্তি? কীভাবে তিনি এতটা সাহস করে নবীজির সামনে বসতে পারলেন?
এ আগন্তুক ছিলেন জিবরাইল আলাইহিস-সালাম, আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো এক মহামানব। তিনি নবীজিকে প্রশ্ন করতে শুরু করলেন:
ঈমান কী?
নবীজি উত্তর দিলেন, ঈমান হলো আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, কিতাবসমূহ, নবীগণ, পরকাল, তাকদির ও মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস রাখা।
জিবরাইল আ. বললেন, ইসলাম কী?
নবীজি বললেন, ইসলাম হলো আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা, সালাত কায়েম করা, রমজানের রোজা রাখা, জাকাত প্রদান করা ও সামর্থ্য থাকলে হজ পালন করা।
জিবরাইল আ. আবার বললেন, ইহসান কী?
নবীজি বললেন, ইহসান হলো এমনভাবে ইবাদত করা, যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ। যদি তা না পারো, তবে অন্তত বিশ্বাস রাখো, আল্লাহ তোমাকে দেখছেন।
এরপর জিবরাইল আ. জিজ্ঞেস করলেন, কিয়ামত কখন হবে?
নবীজি বললেন, জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞাসাকারীর চেয়ে বেশি জানে না।
জিবরাইল জানতে চাইলেন, তাহলে কিয়ামতের পূর্ব লক্ষণ কী?
নবীজি বললেন, মা তার সন্তানকে দাসীর মতো প্রসব করবে (অর্থাৎ সন্তানের অবাধ্যতা বেড়ে যাবে), আর নগ্নপদ, গরিব রাখালরা উঁচু অট্টালিকা নির্মাণ নিয়ে গর্ব করবে।
এরপর জিবরাইল আ. বিদায় নিলেন।
নবীজি ওমর রা. -কে জিজ্ঞেস করলেন, ওমর, তুমি জানো কে ছিলেন তিনি?
ওমর রা. বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন। নবীজি মুচকি হেসে বললেন, তিনি ছিলেন জিবরাইল আ. , তোমাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন। (সূত্র: মুসলিম শরিফ)