ইসলামী বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারি বলেছেন, যারা আল্লাহর রাসুল (স.)-এর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে এবং তাঁকে নিয়ে অবমাননাকর ও অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে, তাদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই। তিনি বাংলাদেশে ব্লাসফেমি আইন বাস্তবায়নের আহ্বান জানান, যাতে ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
শনিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিশাল তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে বক্তব্য দেন তিনি। সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের লালাপাড়া এলাকায় জাবলুন নূর ফাউন্ডেশন আয়োজিত এই মাহফিলে হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মাহফিলে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিচ্ছিন্ন হয়ে চললে চলবে না, একা থাকলে ব্যক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে; কিন্তু ঐক্যবদ্ধ থাকলে শক্তি তৈরি হয়। এই ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে ইসলামের জন্য কাজে লাগাতে হবে। আমরা ঐক্যকে ভালোভাবে দেশ গড়ার কাজে ব্যবহার করতে চাই, কিন্তু কিছু মহল এটা মেনে নিতে পারছে না এবং নানামুখী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশের প্রসঙ্গ টেনে ড. আজহারি বলেন, “আমরা এমন এক দেশের প্রতিবেশী, যে কারণে আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বুঝেশুনে নিতে হয়। আমাদের উচিত দেশের স্বার্থ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকা। ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন এক রাজনৈতিক কাঠামো চাই, যেখানে কেউ কারও ওপর জুলুম করতে পারবে না। স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা লুটপাট, সংঘর্ষ, দুর্নীতি ও টাকা পাচারের সংস্কৃতি দেখে আসছি। এখন সময় এসেছে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর, দেশের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।”
জনপ্রিয় এ ইসলামি বক্তা বলেন, নতুন বাংলাদেশে এগুলোর পুনরাবৃত্তি হোক এটা চাই না। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়েগুলোতে গবেষণা হোক। যে হাতে কলম লেগেছে ওই হাতে যেন অস্ত্রের স্পর্শ না লাগে । আমরা এমন নেতা চাই যে নেতা অসুস্থ হলে আমরা সারা দেশের মানুষ জায়নামাজ বিছিয়ে দোয়া করব।
আজহারী বলেন, শান্তশিষ্ট, শান্তিপ্রিয়, ইসলামপ্রিয় মানুষকে উত্তেজিত করার জন্য নবীকে গালি দেওয়া হচ্ছে। এমন অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আমাদের মুখে আনা সম্ভব না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিনীত আবেদন করতে চাই। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা আপনারা নেবেন না। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে জনতা নিজেরাই আইন প্রয়োগ করে বিচার করার দায়িত্ব হাতে তুলে নেবে, এটা আমরা চাই না।
মিজানুর রহমান মাহফিলে প্রায় সোয়া একঘণ্টা বক্তব্য দেন। পরে তিনি ইসলামের আলোকে, আসন্ন রোজা সম্পর্কে রমজানের করণীয় ও ফজিলতের বয়ান পেশ করেন।
জাবলুন নূর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের আমির আবু জর গিফারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। মাহফিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার লক্ষাধিক মানুষ যোগ দেন। মাহফিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য ও নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করে।