ইসলামে মুসলমানদের জন্য গোশত খাওয়ার বিষয়ে দুটি প্রধান শর্ত রয়েছে। প্রথমত, গোশতটি হালাল হতে হবে, এবং দ্বিতীয়ত, আল্লাহর নামে পশুটি জবেহ হতে হবে। তবেই তা খাওয়া যাবে। যদি আল্লাহর নাম উচ্চারিত না হয়, তবে সেটি খাওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ। এমনকি, মুসলিম রেস্টুরেন্ট বা সুপারশপের বিষয়েও যদি জানা না থাকে যে, ক্রয়কৃত গোশত আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করা হয়েছে কিনা, এই সন্দেহ থাকলে তা খাওয়া যাবে না। তবে, ভুলবশত আল্লাহর নাম উচ্চারণ না করলে সেই গোশত খাওয়া জায়েজ থাকবে। (আল-বিনায়াহ, খণ্ড: ১০, পৃষ্ঠা: ৬৪৫)
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, وَلَا تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ
তোমরা সে সব খাবার খেয়ো না, যেগুলোর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, এটা তো পাপ ও গুনাহ। (সুরা আনআম, আয়াত: ১২১)
হাদিসে এসেছে, রসুল সা. বলেছেন, আমি শুধু সেই প্রাণী খাই, যার ওপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে, আমি মূর্তির নামে জবাই করা প্রাণী খাই না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৮২৬, ৩৬১৪)
অতএব, যদি জানা যায় যে, পশুটি হালাল এবং বিসমিল্লাহ বলে জবাই করা হয়েছে, তবে অমুসলিম দেশে থেকেও তা খাওয়া জায়েজ। তবে সর্বোত্তম হবে, নিজে পশু ক্রয় করে তা আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করা।
সন্দেহজনক খাদ্য থেকে দূরে থাকা এবং হারাম বা সন্দেহজনক খাবারের প্রতি সতর্ক থাকা ইমান রক্ষা করার অন্যতম মাধ্যম। রসুল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি সন্দেহজনক কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নিজের ঈমান ও সম্মান রক্ষা করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২)
অন্য হাদিসে রাসুল সা. বলেন, কোনো বান্দা ততক্ষণ আল্লাহভীরুদের অন্তর্ভুক্ত হয় না, যতক্ষণ না সে হারামে লিপ্ত হওয়ার ভয়ে বৈধ জিনিসও পরিহার করে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪২১৫)
মুসলিম রেস্টুরেন্ট কিংবা সুপারশপ থেকে বিশ্বাসের সাথে গোশত কিনে খাওয়া বৈধ, তবে যদি নিশ্চিত হন যে সেখানে আল্লাহর নাম ছাড়া জবাই করা হয় বা অমুসলিম কর্তৃক জবাই করা হয়, তবে সে গোশত খাওয়া যাবে না। (রদ্দুল মুহতার: ৬/২৯৯, ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ১৭/৪০১, আহসানুল ফতোয়া: ৮/১০৬)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই গুরুত্বপূর্ণ বিধান পালন করার তৌফিক দিন। আমিন।