সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

রাষ্ট্র গঠন ও সংস্কারের এক যুগান্তকারী দৃষ্টিভঙ্গি

পূর্ববর্তী প্রকাশের পর : বর্তমানে আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা, সংবিধান সংশোধন কিংবা সংস্কার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই এমন আলোচনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, কারণ সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদা ও পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়। প্রতিটি রাষ্ট্রের কিছু মৌলিক নীতিমালা থাকে, যেগুলোর মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। যখন এই নীতিমালায় কোনো ধরনের ত্রুটি বা সমস্যা দেখা […]

নিউজ ডেস্ক

১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯:২৫

পূর্ববর্তী প্রকাশের পর : বর্তমানে আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা, সংবিধান সংশোধন কিংবা সংস্কার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই এমন আলোচনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, কারণ সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদা ও পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়। প্রতিটি রাষ্ট্রের কিছু মৌলিক নীতিমালা থাকে, যেগুলোর মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।

যখন এই নীতিমালায় কোনো ধরনের ত্রুটি বা সমস্যা দেখা দেয়, তখন তা সংশোধন কিংবা সংস্কার করা প্রয়োজন। এসব মৌলিক নীতিমালার মধ্যে অন্যতম হলো ‘ন্যায়বিচার’ বা ইনসাফ, যা একটি রাষ্ট্রের সঠিক ও কার্যকর পরিচালনার জন্য অপরিহার্য।

আল-কুরআনে বর্ণিত রাষ্ট্র গঠন ও সংস্কারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যখন মানুষদের ভিতরে বিচার করবে তখন ইনসাফ বা ন্যায়বিচারের সাথে বিচার করবে। (সুরা আন নিসা, আয়াত: ৫৮)

একটি রাষ্ট্রের মূল কাঠামো তার প্রশাসনিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে, এবং প্রশাসনিক কাঠামোটি মজবুত হতে পারে তখনই, যখন রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকে। যেখানে ন্যায়বিচারের অভাব, সেখানে প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রাষ্ট্রে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।

যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা সোয়াদে দাউদ আ. -কে নির্দেশ দিয়ে বলেন, হে দাউদ! আমি পৃথিবীতে তোমাকে খলীফা বানিয়েছি। সুতরাং তুমি মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার করো এবং খেয়াল-খুশীর অনুগামী হয়ো না। অন্যথায় তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চিতভাবে জেনে রেখ, যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। (সুরা সোয়াদ,আয়াত: ২৬)

বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে রাষ্ট্রপ্রধানরা ক্ষমতায় আসার পর অনেক সময় নিজের দলীয় বা রাজনৈতিক স্বার্থে বিচারের প্রতি অবিচল থাকতে পারেন না, ফলে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা এমন এক শক্তিশালী মডেল হিসেবে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, যা প্রমাণিত করেছে যে, যখন কোনো রাষ্ট্র ন্যায়বিচারের পথে পরিচালিত হয়, তখনই সেখানে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।

আল-কুরআন শুধু মুসলমানদের জন্যই নয়, বরং এটি একটি সার্বজনীন জীবন ব্যবস্থা, যা সকল মানুষের জন্য। এখানে দেওয়া নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করলে, ধর্ম ও বর্ণের ভেদাভেদ ছাড়াই সমস্ত মানবজাতি ন্যায্য বিচার পাবে।

আজকের আধুনিক পৃথিবীতে আমরা যখন কোনো নতুন আবিষ্কার বা প্রযুক্তি ব্যবহার করি, তখন সেই আবিষ্কারকের নির্দেশনা মেনে চলা হয়, কারণ আবিষ্কারকই সবচেয়ে ভালো জানেন তার সৃষ্টি কীভাবে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাবে। তেমনি, যেহেতু মহান আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীসহ সমস্ত সৃষ্টি করেছেন, তিনি সবচেয়ে ভালো জানেন কীভাবে পৃথিবী সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে।

তিনি পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে পৃথিবী পরিচালনার জন্য পূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাই, যদি আমরা পৃথিবীতে সত্যিকার শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা চাই, আমাদের অবশ্যই তাঁর দেয়া নির্দেশনার অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহর নির্দেশনার বাইরে কোনোভাবেই পৃথিবী সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হতে পারে না।

এই বাস্তবতা আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতিমালা, সংবিধান বা সংস্কার নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে, যে কীভাবে ন্যায়বিচার এবং মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পৃথিবীকে শান্তির পথে পরিচালিত করা সম্ভব।


লেখক: নাজমুল আরিফীন বিন মুহাম্মদ
শিক্ষার্থী: আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, কায়রো মিশর।

ইসলাম ও জীবন

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে জশনে জুলুছে লাখো মুসল্লির ঢল

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীতে আয়োজিত হলো জশনে জুলুছ। আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া কর্তৃক আয়োজিত এই মহাসমাবেশে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন। সমাবেশে যোগ দেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়ার চেয়ারম্যান ও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন হযরত শাহসুফী শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ […]

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে জশনে জুলুছে লাখো মুসল্লির ঢল

ছবি সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৩

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীতে আয়োজিত হলো জশনে জুলুছ। আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া কর্তৃক আয়োজিত এই মহাসমাবেশে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন।

সমাবেশে যোগ দেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়ার চেয়ারম্যান ও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন হযরত শাহসুফী শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ অল-হাসানী। তাঁর নেতৃত্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু হওয়া জুলুছ দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন ও কদমপোয়ারা এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উদ্যানে ফিরে আসে। পরে এটি শান্তি সমাবেশে পরিণত হয়।

প্রচলিত ঐতিহ্য অনুযায়ী জশনে জুলুছে অংশ নিতে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসেন। হাতে ইসলামী পতাকা, কালিমার ব্যানার ও বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো পরিবেশ। আনন্দমুখর এই শোভাযাত্রা ইসলামের শান্তির বার্তা ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয়।

শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আঞ্জুমানের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ অল-হাসানী। তিনি বলেন, “মহানবী (সা.) সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমত হয়ে এসেছিলেন। তাঁর দেখানো আদর্শ ও জীবনপদ্ধতি অনুসরণ করলেই বিশ্বে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, ইসলাম মানবতার ধর্ম, আর ইসলামের শিক্ষা হলো ভালোবাসা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের।

প্রতিবছরের মতো এবারের জশনে জুলুছেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো শোভাযাত্রা ঘিরে ছিল পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর বিশেষ নজরদারি।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মনে করছেন, এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইসলামের শান্তি ও সহনশীলতার বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে সমাজে। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কাছে মহানবী (সা.)-এর জীবনদর্শন পৌঁছে দিতে জশনে জুলুছ কার্যকর ভূমিকা রাখছে।