বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

রজব মাসে নির্দিষ্ট কোনো আমল নেই: শায়খ ডা. হোসাইন বিন আব্দুল আজিজ আলে শাইখ

ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো, যেকোনো ইবাদত বা সৎকাজ কুরআন-সুন্নাহতে যার কোনো প্রমাণ নেই, তা নতুনভাবে উদ্ভাবিত ও বিদআত হিসেবে গণ্য হবে। ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হলো রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই মহান বাণী, যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বিনের মধ্যে এমন কিছু উদ্ভাবন করে, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৬৯৭) অন্য একটি […]

নিউজ ডেস্ক

১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯:৫৪

ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো, যেকোনো ইবাদত বা সৎকাজ কুরআন-সুন্নাহতে যার কোনো প্রমাণ নেই, তা নতুনভাবে উদ্ভাবিত ও বিদআত হিসেবে গণ্য হবে। ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হলো রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই মহান বাণী, যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বিনের মধ্যে এমন কিছু উদ্ভাবন করে, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৬৯৭) অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করে, আমাদের দ্বিনের নির্দেশনার সাথে যার মিল নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৩৮৫)

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কিছু মাসকে পবিত্র করেছেন, তার মধ্যে একটি হলো রজব মাস। মহান আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গণনায় মাস বারটি; তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের উপর জুলুম কর না। (সুরা তওবা, আয়াত: ৩৬)

এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, একজন মুসলমানের জন্য সব সময়ই আল্লাহর বিধান ও নিদর্শনসমূহকে সম্মান করা অপরিহার্য। পবিত্র মাসগুলোতে এসবের প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এর মানে হলো হারাম কাজগুলো থেকে বিরত থাকা, পাপ থেকে বাঁচা, নেক কাজ দ্রুত করা এবং বিদআত ও নব উদ্ভাবিত ইবাদতগুলো থেকে দূরে থাকা।

উলামায়ে কেরামের কাছে নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত যে, রজব মাসকে বিশেষ কোনো নফল ইবাদত বা আমলের জন্য নির্ধারণ করার কোনো প্রমাণ নেই। অবশ্য যেসব আমল সার্বক্ষণিক বৈধ, সেগুলো অবশ্যই করা যাবে। অনেক হাদিস রয়েছে যেগুলোতে রজব মাসে বিশেষভাবে রোজা রাখা বা রাত জাগরণ করার ফজিলত উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু হাদিসের বিশেষজ্ঞ আলেমগণ সেগুলোকে হয় দুর্বল অথবা সম্পূর্ণ জাল বলে প্রমাণ করেছেন।

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন, রজবের ফজিলত, রজবের রোজা রাখা বা এই মাসে বিশেষ কোনো আমল করার বিষয়ে যে হাদিসগুলো রয়েছে, সেগুলো হয় দুর্বল, নয় মিথ্যা। ইবনে তাইমিয়া, ইবনে কাইয়্যিম, ইবনে রজব ও ইমাম নববী রহ.-এর মতো অন্যান্য আলেমও একই বক্তব্য দিয়েছেন।

রজব মাসের ২৭ তারিখকে মেরাজের রাত হিসেবে উদ্‌যাপন করা একটি নব উদ্ভাবিত বিদআত। বাস্তবে মেরাজের সঠিক তারিখ নির্ধারণে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই। তাই, এই রাত উদ্‌যাপন করাও ভিত্তিহীন।

প্রচলিত আছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাসে প্রবেশ করলে বলতেন, হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন। সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। কিন্তু এ কথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে সঠিক নয়। ইমাম নববী, ইবনে রজব ও পরবর্তী অনেক মুহাদ্দিস, যেমন শাইখ ইবনে বায ও আলবানি রহ. একে দুর্বল হাদিস বলে গণ্য করেছেন।

অবশ্য কুরআন ও সুন্নাহর সাধারণ প্রমাণ অনুসারে আল্লাহর কাছে দোয়া করা বৈধ। নির্দিষ্টভাবে কোনো দোয়া উদ্ভাবন করা সঠিক নয়।

ইমাম ইবনে রজব রহ. বলেছেন, মুআল্লা ইবনে ফজল বলেন, সালাফরা ছয় মাস আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যেন তিনি তাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দেন। আর বাকি ছয় মাস দোয়া করতেন যেন আল্লাহ তাদের আমল কবুল করেন। তাই, শরিয়তের অনুসারী হোন, সফল হবেন।

শরিয়তের নির্ভুল নির্দেশনা মেনে চলুন, এতে সফলতা ও কল্যাণ লাভ করবেন। আর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে কিছু বলতে হলে নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া বলবেন না। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা আল্লাহ ও রসুলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা কৃপা লাভ করতে পার। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩২)

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক ভাবে বুঝে আমল করার তৌফিক দান করুন । আমিন ।

ইসলাম ও জীবন

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে জশনে জুলুছে লাখো মুসল্লির ঢল

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীতে আয়োজিত হলো জশনে জুলুছ। আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া কর্তৃক আয়োজিত এই মহাসমাবেশে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন। সমাবেশে যোগ দেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়ার চেয়ারম্যান ও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন হযরত শাহসুফী শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ […]

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে জশনে জুলুছে লাখো মুসল্লির ঢল

ছবি সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৩

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীতে আয়োজিত হলো জশনে জুলুছ। আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া কর্তৃক আয়োজিত এই মহাসমাবেশে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন।

সমাবেশে যোগ দেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়ার চেয়ারম্যান ও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন হযরত শাহসুফী শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ অল-হাসানী। তাঁর নেতৃত্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু হওয়া জুলুছ দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন ও কদমপোয়ারা এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উদ্যানে ফিরে আসে। পরে এটি শান্তি সমাবেশে পরিণত হয়।

প্রচলিত ঐতিহ্য অনুযায়ী জশনে জুলুছে অংশ নিতে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসেন। হাতে ইসলামী পতাকা, কালিমার ব্যানার ও বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো পরিবেশ। আনন্দমুখর এই শোভাযাত্রা ইসলামের শান্তির বার্তা ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয়।

শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আঞ্জুমানের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ অল-হাসানী। তিনি বলেন, “মহানবী (সা.) সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমত হয়ে এসেছিলেন। তাঁর দেখানো আদর্শ ও জীবনপদ্ধতি অনুসরণ করলেই বিশ্বে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, ইসলাম মানবতার ধর্ম, আর ইসলামের শিক্ষা হলো ভালোবাসা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের।

প্রতিবছরের মতো এবারের জশনে জুলুছেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো শোভাযাত্রা ঘিরে ছিল পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর বিশেষ নজরদারি।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মনে করছেন, এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইসলামের শান্তি ও সহনশীলতার বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে সমাজে। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কাছে মহানবী (সা.)-এর জীবনদর্শন পৌঁছে দিতে জশনে জুলুছ কার্যকর ভূমিকা রাখছে।