পবিত্র কুরআনুল কারিমে এমন কিছু আয়াত রয়েছে, যেগুলো পাঠ করলে সিজদা করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। এই আয়াতগুলোর সংখ্যা কুরআনে মোট ১৪টি। এই আয়াতগুলো পাঠ করার সময় আমাদের মধ্যে কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। তাই আজকে সিজদায়ে তেলাওয়াতের বিষয়টি স্পষ্টভাবে আলোচনা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।
সিজদা কার উপর আবশ্যক?
যার উপর নামাজ ফরজ, তার উপর সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয়। ঘুম বা মাতাল অবস্থায় তেলাওয়াত করলেও সিজদা ওয়াজিব হবে। কাফের, পাগল, শিশু, হায়েজ (মেনস্ট্রুয়েশন) অথবা নেফাসগ্রস্ত (যাদের সন্তান প্রসবের পর রক্তপাত চলছে) মহিলার উপর সিজদা ওয়াজিব নয়।
সিজদার আয়াত পাঠকারী ও শ্রবণকারী উভয়ের উপর সিজদা ওয়াজিব হবে। তবে রেকর্ডকৃত তেলাওয়াত শোনা হলে সিজদা ওয়াজিব হবে না।কোনো স্থানে বসে বা দাঁড়িয়ে এক আয়াত বারবার তেলাওয়াত করলে একবার সিজদা করলেই যথেষ্ট হবে। তবে স্থান পরিবর্তন করলে একাধিকবার সিজদা ওয়াজিব হবে।
সিজদা করার পদ্ধতি
দাঁড়িয়ে, হাত না তুলে তাকবীর বলে সিজদায় যেতে হবে। সিজদা যেমন নামাজের সিজদা হয়, তেমনি সিজদায় গিয়ে سبحان ربي الاعلى (সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা) এই তাসবীহ তিনবার পড়তে হবে।সিজদা শেষ হলে, তাকবীর বলে উঠে যেতে হবে এবং কোনো অতিরিক্ত দোয়া বা সালাম ফেরাতে হবে না।
নামাজের মধ্যে সিজদায়ে তেলাওয়াত আদায়ের নিয়ম
আয়াত তিলাওয়াতের পর তাকবীর বলে সিজদা করতে হবে এবং এরপর আরো কিছু আয়াত তিলাওয়াত করে রুকুতে যেতে হবে।তবে, যদি কেউ সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সরাসরি রুকুতে চলে যায় এবং নামাজের সিজদার সঙ্গে তিলাওয়াতে সিজদার নিয়ত করে, তাহলে সিজদা আদায় হয়ে যাবে।
সিজদার শর্তাবলি
নামাজের যে শর্তগুলো আছে, সিজদার ক্ষেত্রেও তা-ই শর্ত হয়ে থাকে।যে কারণে নামাজ ভেঙে যায়, সে কারণেই সিজদাও নষ্ট হয়। যেমন কথা বলা, জোরে হাসি দেয়া, ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য কোনো কাজ করা ইত্যাদি।সিজদা নষ্ট হলে পুনরায় আদায় করতে হবে।
সিজদা কখন আদায় করতে হবে
তেলাওয়াতে সিজদার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যখনই পাঠ করা হবে, তখনই সিজদা করা উত্তম। তবে, পরে করলেও কোনো অসুবিধা নেই, তবে তা অবশ্যই আদায় করতে হবে।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৯২-১৯৬)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে বুঝে তা আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।