বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

কারো ভুল হলে যেভাবে শুধরে দিতেন নবীজি

মানুষ স্বভাবতই ভুল করে থাকে। তবে ভুল করলে তা সংশোধন করা এবং অন্যকে সংশোধনের পথ দেখানো একজন মুসলমানের গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক দায়িত্ব। রসুলুল্লাহ সা. ছিলেন মানবতার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি অত্যন্ত সুন্দর ও কার্যকরী পদ্ধতিতে মানুষের ভুল সংশোধন করেছেন। তাঁর এই পদ্ধতি আজও আমাদের জন্য অনুসরণযোগ্য। আজ আমরা জানবো, রসুলুল্লাহ সা.-এর ভুল সংশোধনের পাঁচটি প্রধান পদ্ধতি সম্পর্কে। […]

নিউজ ডেস্ক

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:০৪

মানুষ স্বভাবতই ভুল করে থাকে। তবে ভুল করলে তা সংশোধন করা এবং অন্যকে সংশোধনের পথ দেখানো একজন মুসলমানের গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক দায়িত্ব। রসুলুল্লাহ সা. ছিলেন মানবতার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি অত্যন্ত সুন্দর ও কার্যকরী পদ্ধতিতে মানুষের ভুল সংশোধন করেছেন। তাঁর এই পদ্ধতি আজও আমাদের জন্য অনুসরণযোগ্য।

আজ আমরা জানবো, রসুলুল্লাহ সা.-এর ভুল সংশোধনের পাঁচটি প্রধান পদ্ধতি সম্পর্কে। ইনশাআল্লাহ।

১. তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য নয়, সুন্দর করে বোঝানো

রসুলুল্লাহ সা. কখনোই ভুলকারীকে অপমান বা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন না। বরং খুব সুন্দরভাবে তাকে ভুল বুঝিয়ে দিতেন। একবার মুয়াবিয়া ইবনে হাকাম রা. রসুলুল্লাহ সা. -এর সঙ্গে নামাজে ছিলেন এবং ভুলক্রমে নামাজে হাঁচি দেয়ার পর তিনি ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলেছিলেন।

উপস্থিত লোকজন তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে থাকলে তখন তিনি চুপ হয়ে যাই। নামাজ শেষে রসুলুল্লাহ সা. তাকে তিরস্কার না করে,নম্রভাবে জানিয়ে দিলেন যে নামাজে কথা বলা উচিত নয়, এটি তাসবিহ, তাকবির এবং কোরআন তেলাওয়াতের জন্য নির্ধারিত।

২. ভালোবাসায় ভুল শোধরানো

একদিন গ্রামে বসবাসকারী এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ সা.-এর মসজিদে প্রবেশ করল। এরপর সে ব্যক্তি মসজিদে প্রস্রাব করে ফেললে সাহাবিরা তাকে বাধা দিতে গেলে, রাসূলুল্লাহ সা. তাকে বাধা দিতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, তাকে ছাড় দিন।

এরপর তিনি নম্রভাবে তাকে বুঝালেন যে মসজিদ আল্লাহর ইবাদত ও স্মরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে, এখানে প্রস্রাব করা উচিত নয়। রসুলুল্লাহ সা. এর এই কোমল, সদয় পদ্ধতি মানুষকে দ্রুত সংশোধিত করার জন্য কার্যকর ছিল।

৩. ভুলের সঠিক বিকল্প বলে দেয়া

অনেক সময় আমরা ভুল ধরতে গিয়ে এর সঠিক বিকল্পের সন্ধান দিই না। রসুলুল্লাহ সা. যখন কাউকে ভুল করতে দেখতেন, তখন তিনি শুধু তিরস্কার করতেন না বরং সেই ভুলের সঠিক বিকল্পটিও জানিয়ে দিতেন।

একবার মসজিদে কফের একটি দাগ দেখে তিনি কষ্ট পেয়ে তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন, ‘তোমরা যখন নামাজে দাঁড়াও, তখন তোমরা তোমাদের রবের সঙ্গে একান্তে কথা বলো।’ তিনি তাদের বলে দিলেন কীভাবে তাদের আচরণ সঠিক হতে পারে।

৪. বিবেকবোধ জাগিয়ে তোলা

ভুলকারীর বিবেকবোধকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা। কেননা রসুলুল্লাহ সা. কাউকে যখন ভুলে আবদ্ধ দেখতেন, তখন তিনি তাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ না করে, বরং বিবেকবোধ জাগ্রত করতেন।

এক যুবক যখন রসুলুল্লাহ সা.-এর কাছে এসে ব্যভিচারের অনুমতি চাইলেন, তখন রসুলুল্লাহ সা. তাঁকে প্রশ্ন করলেন, ‘তুমি কি এটা তোমার মা, বোন বা মেয়ের জন্য পছন্দ করো?’ যুবক বললেন, না আমি কখনো তা পছন্দ করব না।’

এরপর রসুলুল্লাহ সা. তার জন্য দোয়া করলেন, এবং যুবকের মনকে পবিত্র করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন। এই আচরণ যুবকটির বিবেককে জাগিয়ে তোলে ও তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।

৫. ভুলের ভয়াবহতা জানানো

ভুলের শাস্তি বা ভয়াবহতা সম্পর্কে জানালে তা থেকে বিরত থাকা সম্ভব। রসুলুল্লাহ সা. কখনো কাউকে একটি ভুলের জন্য শুধু সংশোধন করতেন না, বরং সে ভুলের ভয়াবহতা বা শাস্তি সম্পর্কে সতর্কও করতেন।

একবার তিনি একজন সাহাবিকে মসজিদে নামাজের কাতার থেকে আগে বেরিয়ে যেতে দেখে তাকে তিরস্কার করেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে দাঁড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টি করবেন।’ এই সতর্কতা শোনার পর সাহাবি তার ভুল বুঝতে পারলেন এবং সংশোধন হলেন।

রসুলুল্লাহ সা. -এর ভুল সংশোধনের এই পদ্ধতিগুলি আজও আমাদের জন্য অনুসরণযোগ্য, যা তিনি সবসময় প্রজ্ঞা, সহানুভূতি ও ভালোবাসা দিয়ে সম্পন্ন করেছেন।

অন্যদের ভুল সংশোধন করার সময় আমাদেরও এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর সমাজ গড়তে পারি।

আমরা সবাই যেন রসুলুল্লাহ সা.-এর এই সুন্দর শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনে প্রয়োগ করতে পারি। আমিন।

 

ইসলাম ও জীবন

চাঁদ দেখা গেছে সৌদি আরবে, কাল ঈদ

অবশেষে সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেছে। দেশটির সুপ্রিমকোর্ট আজ এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর ঘোষণা দিয়েছে যে, আগামীকাল রবিবার (৩০ মার্চ) সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এই ঘোষণার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের একটি বড় অংশে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও আগামীকাল রবিবার জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে বাংলাদেশের […]

চাঁদ দেখা গেছে সৌদি আরবে, কাল ঈদ

ছবি: সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

২৯ মার্চ ২০২৫, ২২:৩৮

অবশেষে সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেছে। দেশটির সুপ্রিমকোর্ট আজ এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর ঘোষণা দিয়েছে যে, আগামীকাল রবিবার (৩০ মার্চ) সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এই ঘোষণার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের একটি বড় অংশে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশেও আগামীকাল রবিবার জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটির আনুষ্ঠানিক বৈঠক বসার আগেই সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে আরবি ভাষায় পোস্ট করে জানিয়েছে যে, বাংলাদেশের আকাশে কাল রবিবার খালি চোখে চাঁদ দেখা যাবে। এর অর্থ হলো, বাংলাদেশে আগামী সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

এই ঘোষণায় বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে ঈদের সম্ভাব্য দিন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেলেও, দেশের চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত ধরা হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্রের এই ভবিষ্যদ্বাণী এবং সৌদি আরবে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা যাওয়া বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যেও উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে। তবে বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই দেশব্যাপী ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেলে সাধারণত বাংলাদেশে পরদিন ঈদ উদযাপিত হয়।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্রের এই ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঈদের আগের দিন বাজার ও শপিং মলে কেনাকাটার ধুম পড়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের প্রথা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে এই ঘোষণা বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হতে পারে। এখন সকলের দৃষ্টি দেশের জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির চূড়ান্ত ঘোষণার দিকে।

আন্তর্জাতিক

‘মজলুমকে সাহায্য করা সর্বোত্তম ন্যায়বিচার’

মজলুমকে রক্ষা করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো ইসলাম ধর্মের একটি মৌলিক আদর্শ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। ইসলামে মজলুমদের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য করা মানবতার অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত। মজলুম বলতে বোঝানো হয় তারা যারা শোষণ, অবিচার বা জুলুমের শিকার। অর্থাৎ যাদের অধিকার জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বা যাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা […]

‘মজলুমকে সাহায্য করা সর্বোত্তম ন্যায়বিচার’

ছবি: সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

২৯ মার্চ ২০২৫, ১৬:৪২

মজলুমকে রক্ষা করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো ইসলাম ধর্মের একটি মৌলিক আদর্শ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। ইসলামে মজলুমদের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য করা মানবতার অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত।

মজলুম বলতে বোঝানো হয় তারা যারা শোষণ, অবিচার বা জুলুমের শিকার। অর্থাৎ যাদের অধিকার জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বা যাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মজলুমদের সাহায্য ও রক্ষার বিষয়ে ইসলামে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

ইসলামের বিভিন্ন হাদিসে মজলুমদের সহায়তার গুরুত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “মজলুমের দোয়া থেকে সাবধান থাকো, কেননা তার দোয়া আল্লাহর দরবারে সরাসরি পৌঁছে যায়।” (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম)

আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, “তোমরা মজলুমকে সাহায্য করো, তা সে মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম। কারণ, মজলুমের দোয়া আল্লাহর দরবারে প্রতিহত হয় না।”

ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে যে, জুলুম বা অত্যাচারের শিকার যে কেউ হোক না কেন, তার সহায়তায় এগিয়ে আসা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। ইসলামের এই আদর্শ শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, বরং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাতেও প্রতিফলিত হওয়া উচিত।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্তমান বিশ্বে নির্যাতিত ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার রক্ষায় ইসলামের এই নির্দেশনা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে যারা অবিচার ও বৈষম্যের শিকার, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য সমগ্র মানবজাতির এগিয়ে আসা উচিত।

এখানে মজলুমদের সহায়তা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হল:

১. মহানবী-স. বলেছেন, যে জালিমের কাছ থেকে মজলুমের জন্য প্রতিশোধ নেবে সে বেহেশতে আমার সঙ্গী হবে।
২. মহানবী-স. বলেছেন, জুলুম করার ব্যাপারে ও মজলুম হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও।
৩. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, তোমরা সব সময় জালিমের কঠোর শত্রু ও মজলুমের সাহায্যকারী হও।
৪. মজলুমকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে সর্বোত্তম ন্যায়বিচার- বলেছেন আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. ।
৫. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, সর্বোত্তম শাসক তিনি যিনি জুলুমকে ধ্বংস করেন ও ন্যায়বিচারের পুনরুজ্জীবন ঘটান।
৬.ইমাম জাইনুল আবেদিন তথা ইমাম সাজ্জাদ অ. (ইমাম হুসাইনের-আ. পুত্র) বলেছেন, হে আল্লাহ জালিমের সহায়তা করা থেকে ও মজলুম হওয়া থেকে এবং দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করা ছাড়াই পরিত্যাগ করা ও যাতে আমার অধিকার নেই তা চাওয়া থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাইছি।
৭. ইমাম বাকির আ. বলেছেন, হে আমার সন্তান! তার ওপর জুলুম করা থেকে বিরত থাক আল্লাহ ছাড়া যার আর সহায়তাকারী নেই।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৩৮

ইসলাম ও জীবন

আল-আকসায় লাইলাতুল কদরে প্রায় দুই লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণ

ফিলিস্তিনের আল-আকসা মসজিদে রমজানের ২৬তম রাতে তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত এ নামাজে প্রায় দুই লাখ ফিলিস্তিনি মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে আল-আকসা মসজিদ পরিচালনাকারী ওয়াকফ বিভাগ। আল-আকসা মসজিদে রমজান মাসজুড়ে ইবাদতকারীদের ভিড় লক্ষ করা গেলেও বিশেষ করে লাইলাতুল কদরের সন্ধানে শেষ দশকের রাতগুলোতে মুসল্লিদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ওয়াকফ বিভাগের তথ্যমতে, […]

আল-আকসায় লাইলাতুল কদরে প্রায় দুই লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণ

ছবি: সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

২৮ মার্চ ২০২৫, ০০:৪১

ফিলিস্তিনের আল-আকসা মসজিদে রমজানের ২৬তম রাতে তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত এ নামাজে প্রায় দুই লাখ ফিলিস্তিনি মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে আল-আকসা মসজিদ পরিচালনাকারী ওয়াকফ বিভাগ।

আল-আকসা মসজিদে রমজান মাসজুড়ে ইবাদতকারীদের ভিড় লক্ষ করা গেলেও বিশেষ করে লাইলাতুল কদরের সন্ধানে শেষ দশকের রাতগুলোতে মুসল্লিদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ওয়াকফ বিভাগের তথ্যমতে, রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতির রেকর্ড করা হয়েছে। ইসরায়েলের কঠোর বিধিনিষেধ সত্ত্বেও এক লাখ ৮০ হাজারের বেশি মুসল্লি তারাবির নামাজে অংশগ্রহণ করেন।

লাইলাতুল কদর বা শবেকদর মুসলমানদের জন্য এক মহিমান্বিত রাত। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। যদিও সুনির্দিষ্টভাবে এই রাতটি নির্ধারণ করা হয়নি, তবে এটি রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে যে কোনো একটিতে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে এই রাতকে ‘হাজার মাসের চেয়েও উত্তম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশেষ এই রাতের ফজিলত লাভের আশায় মুসল্লিরা বিপুল সংখ্যায় আল-আকসা মসজিদে সমবেত হন এবং রাতভর ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন। নামাজের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তাসবিহ, কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া-মোনাজাতে ব্যস্ত থাকেন তাঁরা।

আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের বিপুল উপস্থিতি সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ঐক্যবদ্ধ শক্তির চিত্র তুলে ধরে। তবে জেরুজালেমে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ এবং নিরাপত্তার কড়াকড়ির মধ্যেও এতো বিশাল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতি একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের এই বিশাল জমায়েত মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ ইবাদতের প্রমাণ বহন করে। পাশাপাশি এটি ফিলিস্তিনের মানুষের ধর্মীয় চেতনার অবিচলতার একটি উদাহরণ হিসেবেও প্রতীয়মান হচ্ছে।

আল-আকসা মসজিদে ইবাদতরত মুসল্লিদের এমন জমায়েত বিশ্ব মুসলিমের কাছেও গভীর অনুভূতির সঞ্চার করেছে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে এই মসজিদে ইবাদতের মাধ্যমে মুসল্লিরা তাদের ধর্মীয় আচার-আচরণ পালনের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে শান্তি ও রহমত প্রার্থনা করেন।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আল-আকসা মসজিদে তারাবির নামাজে অংশগ্রহণকারী বিপুল মুসল্লির খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিশাল জনসমাগম মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়েও একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করে।