শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

ইসলাম ও জীবন

আল্লাহর ইচ্ছা

মানুষ মহান আল্লাহর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। গোটা দুনিয়ার সমস্ত কার্যক্রম মানুষের চারপাশে আবর্তিত হয়। মানুষের ভালো-মন্দ, পথচলা, খাওয়া-দাওয়া, সংসার গঠন, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এসবই আল্লাহর পরিকল্পনার অধীনে সংঘটিত হয়। আল্লাহ যা ভালো মনে করেন, তাই তিনি করেন, এবং তাঁর পরিকল্পনার সঙ্গে কোনো কিছু মিলানো বা সংশোধন করা সম্ভব নয়। তিনি কারো পরামর্শ বা উপদেশ […]

নিউজ ডেস্ক

১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:১৭

মানুষ মহান আল্লাহর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। গোটা দুনিয়ার সমস্ত কার্যক্রম মানুষের চারপাশে আবর্তিত হয়। মানুষের ভালো-মন্দ, পথচলা, খাওয়া-দাওয়া, সংসার গঠন, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এসবই আল্লাহর পরিকল্পনার অধীনে সংঘটিত হয়। আল্লাহ যা ভালো মনে করেন, তাই তিনি করেন, এবং তাঁর পরিকল্পনার সঙ্গে কোনো কিছু মিলানো বা সংশোধন করা সম্ভব নয়। তিনি কারো পরামর্শ বা উপদেশ ছাড়াই সবকিছু পরিচালনা করেন।

শয়তানের ষড়যন্ত্র ও আল্লাহর পরিকল্পনা

মানুষ সৃষ্টির পর থেকেই শয়তান তাকে পথভ্রষ্ট করার জন্য চেষ্টা করে আসছে। বারবার শয়তান মানুষকে ভুল পথে পরিচালনা করতে ষড়যন্ত্র করেছে, কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর পরিকল্পনায় সঠিক পথের দিশা দেখিয়েছেন। আল্লাহর এই পরিকল্পনার প্রতি সৎ বিশ্বাস, শিক্ষা এবং নবী-রসুলের মাধ্যমে মানুষের জন্য এক সঠিক পথ নির্দেশিত হয়েছে। সূরা আলে ইমরানের ৫৪ নম্বর আয়াতে এ ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নবী-রসুলদের ভূমিকা

মহান আল্লাহ হজরত আদম আ. থেকে শুরু করে যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রসুল পাঠিয়েছেন, যারা তাদের যুগের উপযুক্ত বাণী দিয়ে মানুষকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে পরিচালিত করেছেন। নবী-রসুলদের মূল লক্ষ্য ছিল মানুষকে শয়তানের প্ররোচনা থেকে রক্ষা করা ও আল্লাহর পথে আনার চেষ্টা করা।

মহান আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়

কুরআনুল কারিমে আল্লাহর সর্বশেষ বাণী। নবী মুহাম্মদ সা.-এর সময়েও মক্কার কাফেররা নবীকে কষ্ট দিয়েছিল। তারা মুসলিমদের ধোঁকা দেওয়ার নানা ফন্দি-ফিকির করেছিল। কিন্তু আল্লাহ তাঁর মেহেরবানিতে ঈমানদারদের সাহায্য করেছেন এবং তাদের বিজয় দান করেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর পরিকল্পনায় ঈমানদারদের সর্বদা সাহায্য করেন।

ক্ষমতা, ধন-সম্পদ, এবং সম্মান

আজও পৃথিবীতে অনেক শাসক জনগণকে নির্যাতন করে, জেলে ভরে, গুম করে, খুন করে নিজেদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করে। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় এসব শাসকরা পতিত হয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা হারায়। অনেককে দেশ ছাড়তেও হয়েছে। আল্লাহর পরিকল্পনায় কোনো ভুল হতে পারে না, এবং তাঁর পদক্ষেপের কোনো বাধা নেই। তিনি আমাদের একমাত্র অভিভাবক ও সাহায্যকারী।

আল্লাহর চূড়ান্ত ক্ষমতা ও রাজত্ব

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, বলো, হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন। যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মান দান করেন, আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান (সুরা আলে ইমরান : ২৬)।
এ আয়াতে আল্লাহর সীমাহীন শক্তি ও মহা কুদরতের প্রকাশ ঘটেছে। তিনি বাদশাহকে ফকির এবং ফকিরকে বাদশাহে পরিণত করেন। তিনিই সব ক্ষমতার মালিক।

আল্লাহর রাজত্ব: চিরস্থায়ী ও চিরন্তন

আল্লাহ তায়ালাই মহাজগতের সব ক্ষমতার অধিকারী। তিনি রাজাধিরাজ, এবং তাঁর রাজত্ব সমগ্র সৃষ্টিজগতে কার্যকর। পৃথিবী তাঁর রাজত্বের ক্ষুদ্রতম অংশ মাত্র। মুত্তাকিরা থাকবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে, যোগ্য আসনে, সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী আল্লাহর সান্নিধ্যে।(সুরা কামার : ৫৪-৫৫) সৃষ্টিজগতে সবার রাজত্ব অস্থায়ী, কিন্তু আল্লাহর রাজত্ব চিরন্তন ও চিরস্থায়ী।

কেয়ামতের দিন আল্লাহর একক কর্তৃত্ব

হজরত রসুলুল্লাহ সা. বলেন, আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন পৃথিবী তাঁর মুঠোয় ধারণ করবেন এবং আসমানকে তাঁর ডান হাতে গুটিয়ে নিয়ে বলবেন, আমিই একমাত্র অধিপতি। দুনিয়ার বাদশাহরা কোথায়? (সহিহ বোখারি : ৭৩৮২) এই হাদিসের মাধ্যমে আল্লাহর রাজত্বের অমোঘ এবং অনন্ত শক্তি ফুটে উঠেছে।

প্রকৃত মালিক আল্লাহর চূড়ান্ত অধিকার

আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো শক্তি বা রাজত্ব স্থায়ী নয়। আল্লাহর রাজত্বই চিরস্থায়ী এবং চিরন্তন, আর তিনিই পৃথিবীসহ সমগ্র সৃষ্টির প্রকৃত মালিক। মহিমান্বিত আল্লাহ, যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, সম্মানিত আরশের তিনিই অধিপতি (সুরা মুমিনুন : ১১৬)।

আল্লাহর ক্ষমতা ও রাজত্বই চূড়ান্ত, এবং তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কিছুই প্রতিহত হতে পারে না। তিনি আমাদের একমাত্র অভিভাবক ও সাহায্যকারী, এবং তিনি আমাদের পথ দেখান।

ইসলাম ও জীবন

রমজান মাসের ফজিলত ও আমলসমূহ

পবিত্র রমজান মাসের আগমন মুসলিমদের জন্য অপার আনন্দের বিষয়। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “বলুন, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে, তা এর চেয়ে উত্তম।” (সূরা ইউনুস: ৫৮)। আল্লাহর এই অনুগ্রহের তুলনা কোনো পার্থিব সম্পদের সঙ্গে হতে পারে না, কারণ এটি অনন্ত কল্যাণের প্রতীক। রাসূলুল্লাহ […]

নিউজ ডেস্ক

০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৫

পবিত্র রমজান মাসের আগমন মুসলিমদের জন্য অপার আনন্দের বিষয়। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “বলুন, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে, তা এর চেয়ে উত্তম।” (সূরা ইউনুস: ৫৮)। আল্লাহর এই অনুগ্রহের তুলনা কোনো পার্থিব সম্পদের সঙ্গে হতে পারে না, কারণ এটি অনন্ত কল্যাণের প্রতীক।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও রমজানের আগমনে অত্যন্ত আনন্দিত হতেন। তিনি সাহাবাদের বলতেন, “তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এই মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের বন্দি করা হয়। এই মাসে রয়েছে একটি রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি এই রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে প্রকৃতপক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো।” (নাসায়ী, হাদিস নম্বর: ২১০৬)।

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

১. সিয়াম ফরজ হওয়ার মাস
রমজান মাস ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজার মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। এর একটি হল রমজানের রোজা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর: ৮)।

২. কুরআন নাজিলের মাস
রমজান কুরআন নাজিলের মাস। আল্লাহ বলেন, “রমজান মাস, এতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য দিশারি, স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৫)।

কুরআন কারিম সপ্তম আকাশের লাওহে মাহফুজ থেকে একসঙ্গে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে নাজিল করা হয়েছিল, এরপর ধাপে ধাপে রমজান মাসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি অবতীর্ণ হতে শুরু করে।

৩. জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন রমজান মাস আসে, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের বন্দি করা হয়।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর: ১০৭৯)।

৪. লাইলাতুল কদরের বরকতময় রাত
আল্লাহ বলেন, “লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ এবং রুহ (জিবরাইল) অবতীর্ণ হন প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে প্রত্যেক বিষয়ের জন্য। শান্তিই শান্তি, সেই রাত ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত।” (সূরা আল-কদর: ৩-৫)।

৫. রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়।” (মুসনাদ আহমদ, হাদিস নম্বর: ৭০৮২)।

৬. রমজান পাপ মোচনের মাস
যারা সত্যিকারের খাঁটি অন্তরে ইবাদত করেন, তাদের জন্য এই মাস পাপ থেকে মুক্তির সুযোগ এনে দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের (আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য) সাথে রমজানের রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর: ২০১৪)।

৭. জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস
তিনি আরও বলেন, “রমজানের প্রথম রাতে শয়তান ও বিদ্রোহী জিনদের বন্দি করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। এ সময় একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দেন, ‘হে সৎকর্মপরায়ণ! তুমি অগ্রসর হও! হে পাপাচারী! তুমি বিরত হও!’ প্রতি রাতেই বহু মানুষকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।” (তিরমিজি, হাদিস নম্বর: ৬৮২)।

৮. সৎকাজের প্রতিদান বৃদ্ধি
রমজান মাসে প্রতিটি সৎকর্মের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “রমজানে ওমরাহ করলে তা একটি হজের সমতুল্য।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর: ১৭৮২)।

৯. ধৈর্য ও সবরের মাস
রমজান মাস আমাদের ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। আল্লাহ বলেন, “ধৈর্যশীলদের জন্য বিনা হিসেবে পুরস্কার রয়েছে।” (সূরা আজ-জুমার: ১০)।

১০. মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের মাস
এই মাস মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সংহতির শিক্ষা দেয়। একে অপরকে সাহায্য করা, দান-সদকা বাড়ানো, গরিবদের পাশে দাঁড়ানো—এসব কাজ রমজান মাসে আরও বৃদ্ধি পায়।

আমাদের কর্তব্য কী?

রমজান মাসের এই বিশাল নেয়ামত ও ফজিলতকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে আমাদের অবশ্যই সৎকর্মে ব্রতী হতে হবে। যথাযথভাবে রোজা পালন, বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত, তওবা-ইস্তিগফার, তাহাজ্জুদ ও নফল ইবাদতে মনোনিবেশ করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল অথচ তার গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে পারল না, তার জন্য ধ্বংস অনিবার্য।” (তিরমিজি, হাদিস নম্বর: ৩৫৪৫)।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজানের ফজিলত অনুধাবন করে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আন্তর্জাতিক

পবিত্র রমজান উপলক্ষে আরব আমিরাতে ক্ষমা পাচ্ছেন ১৫১৮ জন কারাবন্দি

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তার মহানুভবতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত ১ হাজার ৫১৮ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তারা এই পবিত্র মাসটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। এই মানবিক সিদ্ধান্ত দুবাইয়ের জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং বন্দিদের […]

পবিত্র রমজান উপলক্ষে আরব আমিরাতে ক্ষমা পাচ্ছেন ১৫১৮ জন কারাবন্দি

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩:২৫

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তার মহানুভবতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত ১ হাজার ৫১৮ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তারা এই পবিত্র মাসটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। এই মানবিক সিদ্ধান্ত দুবাইয়ের জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং বন্দিদের পরিবারগুলো আশার আলো দেখতে পেয়েছে।

দুবাইয়ের অ্যাটর্নি জেনারেল চ্যান্সেলর ইশাম ইশা আল-হুমাইদান জানান, শেখ মুহাম্মাদের এই মহানুভবতা শুধুমাত্র আইনি সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি তার উদারতার প্রতিফলন। রমজানের পবিত্রতা ও ক্ষমার বার্তাকে সম্মান জানিয়ে এই বন্দিদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুবাই পাবলিক প্রসিকিউশন পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে ইতোমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যাতে দ্রুততম সময়ে মুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়।

শেখ মুহাম্মাদের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই উদাহরণ হিসেবে দেখছেন, যা কেবল আইনি শাস্তি লাঘব নয়, বরং সমাজে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে এবং অপরাধীদের জন্য একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে, যাতে তারা পুনরায় সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।

এদিকে, আবুধাবিভিত্তিক আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ১ মার্চ থেকে আরব বিশ্বে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্থাটির পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওদেহ বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি আরব বিশ্বের কিছু এলাকায় চাঁদ দেখা যেতে পারে। যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই রমজান শুরু হবে। তবে যদি চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে ২ মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র এই মাস।

আরবি বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস রমজান মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস, যখন সারা বিশ্বের মুসলিমরা সংযম পালন করেন এবং ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন। এই মাসটি কেবল আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের জন্য নয়, বরং দান-খয়রাত ও সমাজের অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোরও সময়। শেখ মুহাম্মাদের এই সিদ্ধান্ত সেই মানবিকতারই এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তার এই উদ্যোগ শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতে নয়, বরং সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে, যা দানশীলতা ও ক্ষমার মহান শিক্ষা বহন করে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ৯৬৩

ইসলাম ও জীবন

‘মজলুমকে সাহায্য করা সর্বোত্তম ন্যায়বিচার’

মজলুম তারাই যারা শোষণ বা অবিচারের শিকার বা জোর খাটিয়ে যাদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে বা যাদেরকে পুরোপুরি নানা ন্যায্য অধিকার দেয়া হচ্ছে না।

নিউজ ডেস্ক

০৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৩০

মজলুমকে রক্ষা করা এমন একটি বিবেক-সম্মত ও সহজাত বিষয় যার ওপর ইসলাম বেশ জোর দিয়েছে।

মজলুম তারাই যারা শোষণ বা অবিচারের শিকার বা জোর খাটিয়ে যাদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে বা যাদেরকে পুরোপুরি নানা ন্যায্য অধিকার দেয়া হচ্ছে না। এখানে মজলুমদের সহায়তা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হল:

১. মহানবী-স. বলেছেন, যে জালিমের কাছ থেকে মজলুমের জন্য প্রতিশোধ নেবে সে বেহেশতে আমার সঙ্গী হবে।
২. মহানবী-স. বলেছেন, জুলুম করার ব্যাপারে ও মজলুম হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও।
৩. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, তোমরা সব সময় জালিমের কঠোর শত্রু ও মজলুমের সাহায্যকারী হও।
৪. মজলুমকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে সর্বোত্তম ন্যায়বিচার।
৫. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, সর্বোত্তম শাসক তিনি যিনি জুলুমকে ধ্বংস করেন ও ন্যায়বিচারের পুনরুজ্জীবন ঘটান।
৬.ইমাম জাইনুল আবেদিন তথা ইমাম সাজ্জাদ অ. (ইমাম হুসাইনের-আ. পুত্র) বলেছেন, হে আল্লাহ জালিমের সহায়তা করা থেকে ও মজলুম হওয়া থেকে এবং দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করা ছাড়াই পরিত্যাগ করা ও যাতে আমার অধিকার নেই তা চাওয়া থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাইছি।
৭. ইমাম বাকির আ. বলেছেন, হে আমার সন্তান! তার ওপর জুলুম করা থেকে বিরত থাক আল্লাহ ছাড়া যার আর সহায়তাকারী নেই।

সূত্রঃ পার্সটুডে