ইসলামে দাড়ি রাখা একজন মুসলমানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হাদিস শরীফে এসেছে, তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর, দাড়ি লম্বা রাখ এবং গোঁফ ছোট কর। (বুখারি ৫৮৯৩, মুসলিম ৬০০)
এই হাদিস থেকে স্পষ্ট যে, দাড়ি রাখা মুসলিম উম্মতের একটি বড় পরিচয় ও ইসলাম বিরোধীদের থেকে নিজেদের পৃথক করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
দাড়ি রাখার গুরুত্ব ও ফরজিয়ত
ইসলামি বিধান অনুযায়ী, দাড়ি রাখা এক মুষ্ঠি পরিমাণ হওয়া ওয়াজিব। এটা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ইমামদের সর্বসম্মত মত। এক মুষ্ঠির কম রাখা বা সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হারাম, এটা কবিরা গুনাহ হিসেবে গণ্য।
দাড়ি রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। এটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মানের পরিচয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে সম্মান করে, সেটি তার হৃদয়ের তাকওয়ার পরিচায়। (সুরা আল-হাজ: ৩২)
চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা ও সমাধান
কিন্তু আজকের সমাজে অনেক সময় চাকরির ক্ষেত্রে দাড়ি রাখার বিষয়টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। যখন কোনো প্রতিষ্ঠান দাড়ি কাটার শর্ত দিয়ে চাকরি দেয়, তখন একজন মুসলমানের জন্য একটি দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করা খুবই জরুরি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা ধৈর্য ধর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সুরা আল-আনফাল: ৪৬)
নরম ভাষায় কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের বিশ্বাসের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করা উচিত। প্রয়োজনে এমন কোনো ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে যার কথা কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিতে পারে।
যদি কোনো উপায়ে সমস্যার সমাধান না হয় এবং আর্থিক অবস্থা অনুমতি দেয়, তবে চাকরি ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে কেউ আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না। (সুরা আত-ত্বালাক: ২-৩)
দাড়ি রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। যদিও সমাজের চাপে অনেক সময় এটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়, তবুও একজন মুসলমানকে নিজের বিশ্বাসের প্রতি অটল থাকতে হবে। আল্লাহ তায়ালা সবসময় তার বান্দাদের সাহায্য করেন। তাই ধৈর্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে সব সমস্যার সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখতে হবে: সৃষ্টির আনুগত্য তখনই বৈধ, যখন তা স্রষ্টার প্রতি অবাধ্যতা সৃষ্টি না করে। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অসৎকাজে কোনো আনুগত্য নেই; আনুগত্য কেবল সৎকাজের ক্ষেত্রেই হতে হবে। (সহিহ বুখারি ৭১৪৫)
আল্লাহ তায়ালা সর্ব ক্ষেত্রে তাঁর দ্বীনকে অনুসরন করে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।