নামাজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। নামাজের প্রতিটি রুকনে বিভিন্ন দোয়া ও জিকির পাঠ করা হয়, যা আল্লাহর সাথে মুমিন মুসলমানের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও বিনীততা প্রকাশে করে। আজ আমরা রুকু থেকে উঠার সময় যেসব দোয়া বলা হয়, বিশেষ করে ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ ও ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ সম্পর্কে বিস্তারিত জানব ইনশাআল্লাহ।
নামাজে ইমাম যখন রুকু থেকে ওঠার সময় ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ বলবেন এরপর বলবেন ‘রব্বানা লাকাল হামদ’। তখন উক্ত দোয়াটি অনুসরণ করে মুক্তাদি (যিনি ইমামের পেছনে নামাজ পড়ছেন) শুধু ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলবেন। তবে একাকী নামাজি ব্যক্তি ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ ও ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ উভয়টি দোয়া পড়বেন।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সা. যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ বলে রুকু থেকে উঠতেন। এরপর ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলতেন। (বুখারি, হাদিস: ৭৯৫)
রসুলুল্লাহ সা. আরও বলেছেন, ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ বলবে, তখন তোমরা বলবে ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল’ হামদ। কারণ তোমাদের যার এ বলা ফেরেশতাদের বলার সঙ্গে মিলে যাবে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস: ৭৯৬)
রসুলুল্লাহ সা. থেকে মোট চারভাবে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বাক্যটি পাঠ করার বর্ণনা পাওয়া যায়—
রব্বানা লাকাল হামদ।
রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ।
আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ।
আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ।
রিফা ইবনে রাফি রা. বলেন, একবার আমরা রসুলুল্লাহ সা. -এর পেছনে নামাজ আদায় করলাম। তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ পড়লেন, তখন পেছন থেকে এক সাহাবি পড়লেন, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ হামদান কাসিরান তাইয়িবান মুবারাকান ফি’।
নামাজ শেষে রসুলুল্লাহ সা. জানতে চাইলেন, কে এমনটা পাঠ করেছে? সে সাহাবি বলল, আমি হে আল্লাহর রসুল, তখন রসুলুল্লাহ সা. বললেন, আমি দেখলাম ৩০ জনের অধিক ফেরেশতা এ আমলের সওয়াব লেখার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। (বুখারি, হাদিস: ৭৯৯)
রুকু থেকে উঠার সময় পাঠ করা দোয়াগুলি মুসলমানের ইমান ও ইবাদতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই দোয়াগুলি পাঠ করার মাধ্যমে মুমিন মুসলমান আল্লাহর সান্নিধ্য প্রার্থনা করে ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। অতএব, আমাদের সকলের উচিত নিয়মিতভাবে এই দোয়াগুলি পাঠ করা এবং এর ফজিলত অর্জনের চেষ্টা করা।