বিয়ের ঘটকালি করে বিনিময় গ্রহণ করা ইসলামে জায়েজ। কারণ, পাত্র-পাত্রীর সন্ধান দিয়ে তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে পরিবার, সমাজ তথা মানুষের উপকার সাধিত হয়। এটি একটি সহযোগিতার কাজ, যা ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী প্রশংসনীয়। মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা ভালো কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করো….।(সুরা মায়েদা : ২) এর মাধ্যমে সমাজে সহযোগিতা এবং সম্পর্কের সংযোগ বৃদ্ধি পায়, যা ইসলামিক দৃষ্টিকোণে এক ইতিবাচক কাজ।
তবে, এই ক্ষেত্রে কোনো ধোঁকা বা প্রতারণা করা যাবে না। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেছেন যে, হজরত রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দেবে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (সহিহ মুসলিম : ১০১) তাই, যে ব্যক্তি ঘটকালির মাধ্যমে সঠিকভাবে সহযোগিতা করবে, সে বিনিময়ে মজুরি বা হাদিয়া গ্রহণ করতে পারে, তবে প্রতারণা বা কোনো ধরনের অসত্য কাজ করা যাবে না।
ইসলাম বিবাহকে সহজ করার নির্দেশ দিয়েছে, কারণ, যদি বিয়েকে কঠিন করা হয়, তা হলে সমাজে ব্যভিচার ও অন্যান্য অশুদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, হজরত রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা যে ব্যক্তির দ্বিনদারি ও নৈতিক চরিত্রে সন্তুষ্ট আছ, যদি সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সঙ্গে বিয়ে দাও। তা না করলে পৃথিবীতে ফিতনা-ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। (জামে তিরমিজি : ১০৮৪)
এছাড়া, ঘটকালি করার মাধ্যমে সমাজে ফিতনা-মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়, এবং এতে উভয় পরিবারের মধ্যে সমন্বয় সাধন হয়। তাই, এই কাজের বিনিময়ে মজুরি গ্রহণ জায়েজ। ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হলো- বৈধ উপকারে বিনিময় গ্রহণ বৈধ। আল্লামা শানকিতি রহ. বলেছেন, বৈধ উপকার প্রদানের বিনিময়ে মজুরি গ্রহণ করা জায়েজ হওয়ার ব্যাপারে ইসলামি আইনজ্ঞদের ঐক্য রয়েছে।(শারহু জাদিল মুসতাকনে : ৯/১৮৬)
শায়খ বিন বাজ রহ. বলেন, বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মজুরি গ্রহণে কোনো দোষ নেই।(ফাতাওয়া ওয়াদ দুরুস)।
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ের ঘটকালি করে বিনিময় গ্রহণ করা জায়েজ, যদি তা সঠিকভাবে ও কোনো প্রতারণা ছাড়া করা হয়।