কুরআন নারীদের সম্পর্কে কী বলে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আজ আমরা কুরআনে উল্লেখিত নারীর পাঁচটি মূল গুণাবলি সম্পর্কে আলোচনা করব। এই গুণাবলি একজন নারীকে তার জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ৫টি গুণাবলি সম্পর্কে
১. চারিত্রিক পবিত্রতা: কুরআন নারীদেরকে চারিত্রিক পবিত্রতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। নারীকে অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে এবং সর্বদা সৎকর্মে নিযুক্ত থাকতে বলা হয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে, মুমিন নারীকে বলুন, তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে। (সুরা নূর, আয়াত: ৩১) এই আয়াতে আল্লাহ নারীদের শালীনতা এবং সতীত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, যা তাদের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নতির পথ উন্মুক্ত করে।
২. লজ্জা ও শালীনতা: শালীনতা ও লজ্জা নারীর সৌন্দর্যকে আরও পরিপূর্ণ করে তোলে। কুরআনে মহান আল্লাহ নারীর শালীন আচরণের প্রশংসা করে বলেন, তখন নারীদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পায়ে তার কাছে এলো। (সুরা কাসাস, আয়াত: ২৫) এই আচরণ নারীকে এক অনন্য মর্যাদা প্রদান করে, যা তার চরিত্রে সৌম্যতা এবং সততা প্রদর্শন করে।
৩. স্বামীর আনুগত্য ও আত্মত্যাগ: ইসলামে পারিবারিক শৃঙ্খলা রক্ষায় নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা আইয়ুব আ.-এর স্ত্রীর চিরকালীন সাহসিকতার উদাহরণ দিয়েছেন, যিনি অসুস্থতা ও দুঃখ-দুর্দশার মধ্যেও স্বামীর পাশে থেকে জীবনযুদ্ধে তার সঙ্গী ছিলেন। আল্লাহ বলেন, স্মরণ করো, আমার বান্দা আইয়ুবকে, যখন সে তার প্রতিপালককে আহ্বান করে…’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৪১-৪৩) স্ত্রীর আনুগত্য ও আত্মত্যাগ নারীকে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে একজন আদর্শবান হওয়ার কথা বলে ।
৪. মার্জিত ভাষা: নারীকে কুরআনে মার্জিত, মিষ্টি ও শালীন ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা ন্যায়সংগতভাবে কথা বলো। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৩২) এর মাধ্যমে নারীদের একটি পবিত্র, দয়ালু এবং মধুর ভাষা ব্যবহারের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা মানুষের মধ্যে ভালোবাসা এবং সম্মান বৃদ্ধি করে।
৫. দীন পালনে পুরুষের সহযোগী: মহান আল্লাহ বলেন, মুমিন পুরুষ ও নারী পরস্পরের বন্ধু। তারা সৎকাজে আদেশ করে, অসৎ কাজে নিষেধ করে…’ (সুরা তওবা, আয়াত: ৭১) ইসলামি সমাজে নারী এবং পুরুষ একে অপরের সহায়ক, যারা আল্লাহর পথে চলতে একে অপরকে সাহায্য করে। নারীর দীন পালন এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠায় অংশগ্রহণ একেবারে অপরিহার্য।
এই গুণাবলীর মাধ্যমে কুরআন নারীকে এক অসাধারণ মর্যাদা দিয়েছে, যা তাকে তার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রের পূর্ণ বিকাশে সহায়তা করে এবং সমাজে পরিপূর্ণ, শালীন ও শক্তিশালী ভূমিকা পালনে উদ্বুদ্ধ করে।