পরীক্ষা অনেকের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে থাকে। পরীক্ষার সময় ছাত্র-ছাত্রীরা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং নানা শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন, যেমন বুক ধড়ফড়, চোখে ঝাপসা দেখা, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে ইসলামের কিছু সহজ নির্দেশনা মেনে চলা যেতে পারে।
আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা
পরীক্ষার আগে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা ও যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া। আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। (সুরা তালাক, আয়াত ৩)
কঠোর পরিশ্রম করা
পরীক্ষায় ভালো ফল পেতে কঠোর পরিশ্রম করা জরুরি। নিজের অলসতাও ত্যাগ করে নিয়মিত পড়াশোনা করা উচিত। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, সবার জন্য তাদের কর্ম অনুযায়ী মর্যাদা রয়েছে। (সুরা আল-আহকাফ, আয়াত ১৯)
সালাতুল হাজত পড়া
পরীক্ষায় যাওয়ার আগে দুই রাকাত ‘সালাতুল হাজত’ নামাজ পড়া এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। কেননা, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতেন, তখন সালাতুল হাজত পড়তেন। (আবু দাউদ, হাদিস ১৩১৯)।
স্থিরতা বজায় রাখা
পরীক্ষায় অস্থির হয়ে তাড়াহুড়া না করে ধীরস্থিরভাবে কাজ করা উচিত। তাড়াহুড়া শয়তানের কাজ, যা ভুল উত্তর দেয়ার কারণ হতে পারে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,ধীরস্থির কাজ আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর তাড়াহুড়া শয়তানের পক্ষ থেকে। (সুনানে বায়হাকি, হাদিস ২০৭৬৭)।
বিসমিল্লাহ ও দরুদ পড়ে শুরু করা
পরীক্ষার শুরুতে “বিসমিল্লাহ” বলে এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওপর দরুদ পাঠ করে শুরু করা উচিত। কারণ, যে ব্যক্তি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন। এছাড়া, উত্তরপত্রে লেখা শুরু করার সময় “বিসমিল্লাহ” বলে শুরু করা উচিত। হাদিসে এসেছে, যেসব কাজ আল্লাহর নাম ছাড়া শুরু করা হয়, সেগুলো বরকতশূন্য।
বেশি দোয়া করা
প্রতিদিন আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত যেন তিনি আমাদেরকে আরও জ্ঞান দান করনে। কুরআনে বলা হয়েছে, হে আমার পরওয়ারদিগার, আমাকে আরও জ্ঞান দাও। (সুরা ত্বহা, আয়াত ১১৪)
কোনো উত্তর মনে না এলে দোয়া পড়া
যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর মনে না আসে, তবে “রব্বিশরহলি সদরি” এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া উচিত (সুরা ত্বহা, আয়াত ২৫-২৮)। কেননা, দোয়া মাধ্যমে বান্দার কাজ সহজ হয়। এছাড়া মুরব্বিদের মুখে আরেকটি দোয়া শোনা যায়, ‘রব্বি ইয়াসসির, ওয়া লা তুআসসির, ওয়া তাম্মিম আলাইনা বিল খাইর’। অর্থ : হে আমার রব, সহজ করুন, কঠিন করবেন না, এবং কল্যাণের সঙ্গে শেষ করার তাওফিক দান করুন।
পরীক্ষা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এতে আতঙ্কিত হওয়া স্বাভাবিক। তবে ইসলাম আমাদেরকে শিখিয়েছে যে, আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে এবং কঠোর পরিশ্রম করলে সব কিছুই সম্ভব। উপরোক্ত নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে আমরা পরীক্ষার আগে চিন্তা কাটিয়ে ফেলতে পারি এবং সফল হতে পারি। আল্লাহ আমাদের সকলকে সফলতা দান করুন। আমিন।