ইসকন মূলত ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কার্যক্রম পরিচালনার একটি সংগঠন। ইসকনের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মন্দির নির্মাণ, ধর্মীয় উপদেশ দেওয়া, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রচার, ভক্তি কার্যক্রম এবং দাতব্য সংস্থা পরিচালনা। মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চার অংশ হিসেবে যোগব্যায়াম ও শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম করে থাকে সংগঠনটি।
ভারতে ব্যাপক ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও ইসকনের জন্ম কিন্তু ভারতে নয়। ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে গঠিত হয় ইসকন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতার নাম ‘অভয়চরণা রবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ’। তবে তিনি ভারতে কোন হিন্দু শিক্ষালয়ে বিদ্যালাভ করেননি, তিনি লেখাপড়া করেছেন খ্রিস্টানদের চার্চে। গুঞ্জন রয়েছে, ইসকনের পরিচালনায় যোগসাজেশ আছে ইহুদিদের। এমনকি ইসরাইলে নিজেদের কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে ইসকন।
বাংলাদেশে ইসকনের কার্যক্রম জারি থাকলেও সংগঠনটির সদস্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। প্রতারণা, জমি দখল, যৌন নিপীড়নসহ বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্ত হয়েছেন ইসকন সদস্যরা। এমনকি সনাতন হিন্দুদের জমি দখলে নিচ্ছে ইসকন-উঠেছে এমন অভিযোগও। ফলে বাংলাদেশের সনাতন ধর্মালম্বীদের অনেকের সাথেই ইসকনের সরাসরি বিবাদে জড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে।
সময়ের ব্যবধানে ভারতবর্ষের বাইরে বিশ্বের বহু দেশে সম্প্রসারণ ঘটেছে সংগঠনটির। তবে কিছু দেশে সংগঠনটি নিষিদ্ধ। আর সেসব দেশের তালিকা করলে শুরুতেই আসবে মালয়েশিয়ার নাম। দেশটিতে ইসকনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ধর্মান্তর করণের অভিযোগ আছে। ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে চীনেও। শিয়াশাসিত ইরানেও ইসকনের ক্রিয়াকলাপের অনুমতি নেই। এ ছাড়া সৌদি আরব ও আফগানিস্তানে ইসকনের কর্মকাণ্ডের অনুমতি নেই।
বাংলাদেশে ইসকন কি চায় ও কি করে ?
স্বাভাবিকভাবে ইসকনের কর্মকাণ্ড শুধু নাচ মনে হলেও আদৌ তা নয়। ইসকনের কয়েকটি কাজ নিম্নরূপ-
১) বাংলাদেশে সনাতন মন্দিরগুলো দখল করা এবং সনাতনদের মেরে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়া। যেমন স্বামীবাগের মন্দিরটি আগে সনাতনদের ছিলো, পরে ইসকনরা কেড়ে আগেরদের ভাগিয়ে দেয়। এছাড়া পঞ্চগড়েও সনাতনদের পিটিয়ে এলাকাছাড়া করে ইসকনরা। ঠাকুরগাও-এ সনাতন হিন্দুকে হত্যা করে মন্দির দখল করে ইসকন। এছাড়া অতিসম্প্রতি সিলেটের জগন্নাথপুরে সনাতনদের রথযাত্রায় হামলা চালিয়েছে ইসকন নেতা মিণ্টু ধর।
২) বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে সাম্প্রদায়িক হামলা করা। কিছুদিন আগে ঢাকাস্থ স্বামীবাগে মসজিদের তারাবীর নামাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো ইসকন। নামজের সময় ইসকনের গান-বাজনা বন্ধ রাখতে বলায় তারা পুলিশ ডেকে এনে তারাবীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এবার হলো সিলেটে।
৩) বাংলাদেশে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংগঠন তৈরী করে, উগ্রহিন্দুত্ববাদের বিস্তৃতি ঘটানো। যেমন- জাতীয় হিন্দু মহাজোট, জাগো হিন্দু, বেদান্ত, ইত্যাদি। বর্তমান অনলাইন জগতে যে ধর্ম অবমাননা তার ৯০% করে ইসকন সদস্যরা।
৪) বাংলাদেশে সম্প্রতিক সময়ে চাকুরীতে প্রচুর হিন্দু প্রবেশের অন্যতম কারণ-ইসকন হিন্দুদের প্রবেশ করানোর জন্য প্রচুর ইনভেস্ট করে।
৫) সিলেটে রাগীব রাবেয়া মেডিকলে কলেজের ইস্যুর পেছনে রয়েছে ইসকন। ইসকন আড়াল থেকে পুরো ঘটনা পরিচালনা করে এবং পঙ্কজগুপ্তকে ফের লেলিয়ে দেয়। এখন পঙ্কজগুপ্ত জমি পাওয়ার পর সেই জমি নিজেদের দখলে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিচারবিভাগে ইসকনের প্রভাব মারাত্মক বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ খোদ প্রধানবিচারপতিও একজন ইসকন সদস্য।
সবার শেষ কথা হচ্ছে- বাংলাদেশে যদি এখনই ইসকনকে নিষিদ্ধ না করা হয়, তবে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে, যেই বিপদে বাংলাদেশে স্বাধীনতা হারালেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?