ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত নবম দিনেও থামেনি। হামলা-পাল্টা হামলায় ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিহত হয়েছেন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক নেতা। এমনকি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির জীবনও হুমকির মুখে পড়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বহু সামরিক অবকাঠামো ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানের খুজেস্তান, আহভাজ ও ইসফাহানে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ইসফাহানের গভর্নরের ডেপুটি সিকিউরিটি অফিসার জানিয়েছেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতেও হামলা হয়েছে, যদিও কোনো বিষাক্ত গ্যাস বা তরল নির্গমন ঘটেনি। ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৪৩০ জন নিহত এবং ৩,৫০০ জন আহত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাব আরও বেশি হতাহতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
জবাবে ইরান পাল্টা হামলায় তেল আবিব, হাইফা ও মোসাদ হেডকোয়ার্টারসহ গুরুত্বপূর্ণ ইসরায়েলি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলের ২৫ জন নিহত ও ২,৫১৭ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির সরকার। ইরানের ড্রোন আক্রমণ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ভেদ করে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হেনেছে, যা বিরল ঘটনা বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
সংঘাতে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া জোরালো হচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, “জয় ইরানেরই হবে।” তিনি ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান সতর্ক করে বলেছেন, এই হামলা অঞ্চলকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সম্পৃক্ত হলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড দাবি করেছেন, ইরান কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে, যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা নাকচ করেছেন।
ইরান সর্বোচ্চ নেতার সম্ভাব্য হত্যাচেষ্টার আশঙ্কায় উত্তরসূরি বাছাইয়ের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে। এদিকে মোসাদ এজেন্টদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইরান, সম্প্রতি আরও ২২ জন এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংঘাতের এই ধারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব সম্প্রদায় এখন দ্রুত সমাধান খুঁজছে, যাতে মধ্যপ্রাচ্য আরও বড় বিপর্যয়ের দিকে না যায়।

তুরস্ক, সৌদি ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ নিয়ে ইসলামি সেনাবাহিনী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। আপনি কি এই আর্মি গঠনের পক্ষে?