ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার তেহরান সরাসরি হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলের হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১৪-কে। ইরানের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, চ্যানেলটি ইরান সম্পর্কে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ তথ্য প্রচার করায় সেটিকে ‘টার্গেট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অফিসটি দ্রুত খালি করতে বলা হয়েছে। হুমকি অনুসারে, যে কোনও সময় এই প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা হতে পারে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইসরায়েল হায়োম-এর বরাতে জানা গেছে, ইরান মনে করছে—ইসরায়েলি মিডিয়া বিশেষ করে চ্যানেল-১৪ তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক জনমত প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যেই পরিচালিত। এই প্রেক্ষাপটে, হামলার সতর্কতা কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনাকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এদিকে, ইরানকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অবস্থান এবং যুদ্ধোন্মুখ কৌশল নিয়ে কড়া সমালোচনায় মুখর হয়েছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন,
“নেতানিয়াহু ২০০২ সালে যেমন যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল পথে ঠেলে দিয়েছিলেন, এখনও তিনি একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করছেন।”
স্যান্ডার্স স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০২ সালে ইরাক যুদ্ধের আগে কংগ্রেসে নেতানিয়াহু দাবি করেছিলেন, সাদ্দাম হোসেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছেন এবং তার শাসন উচ্ছেদ করলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। ওই দাবি থেকে উৎসাহ নিয়ে শুরু হওয়া ইরাক যুদ্ধের পরিণতিতে প্রাণ হারায় ৪ হাজার ৪৯২ মার্কিন সেনা, আহত হন ৩২ হাজারের বেশি, এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি গুণতে হয় প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ডলার। সবচেয়ে করুণ চিত্র—লক্ষাধিক নিরীহ ইরাকি নাগরিকের মৃত্যু।
বার্নি স্যান্ডার্স বলেন,
“নেতানিয়াহুর যুদ্ধ কৌশল শুধু বিপজ্জনকই নয়, এটি ইতিহাসের ভয়াবহ ভুলের পুনরাবৃত্তি। এখন আমেরিকার দায়িত্ব সেই পথে আর না হাঁটা।”
এই অবস্থান মার্কিন রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে ডেমোক্রেটিক দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখন শান্তিপূর্ণ কূটনীতিকে প্রধান সমাধান হিসেবে বিবেচনা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেন প্রশাসনের নীতির সঙ্গে স্যান্ডার্সের মতপার্থক্য এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে—যেখানে প্রশ্ন উঠছে, মধ্যপ্রাচ্যে আগ্রাসন নাকি আলোচনার পথে এগোবে ওয়াশিংটন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধ নয়, এখন সময় কৌশলগত সংলাপ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার দিকে নজর দেওয়ার। কারণ, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত শুধু মধ্যপ্রাচ্যেই নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

তুরস্ক, সৌদি ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ নিয়ে ইসলামি সেনাবাহিনী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। আপনি কি এই আর্মি গঠনের পক্ষে?