কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুক হামলার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক সামরিক অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে একাধিক হামলা চালায়। এর জবাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ব্যাপক সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে আকাশ ও স্থলে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা সূত্র। এই হামলায় পাকিস্তান ব্যাপকভাবে চীন-নির্মিত সমরাস্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় ।
ভারতের অভিযোগ অনুযায়ী, পাকিস্তান যেসব অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তা কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে।
এইচকিউ-৯ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
লাহোরে অবস্থিত একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট ধ্বংস করার দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী, যদিও পাকিস্তান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সহায়তায় পাকিস্তান এইচকিউ-৯ নামক দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশে হামলা চালাতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে। এটি মূলত রাশিয়ার এস-৩০০ এর ডিজাইন অনুসরণ করে নির্মিত এবং উন্নত রাডার ও গাইডেন্স প্রযুক্তিসহ সজ্জিত।
জে-১০সি যুদ্ধবিমান
পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের সামরিক অবস্থানের বিরুদ্ধে তারা চীনে নির্মিত জে-১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। এই এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট মাল্টিরোল ফাইটার জেট একযোগে ছয়টি লেজার-নির্দেশিত বোমা, সাধারণ বোমা ও রকেট বহন করতে সক্ষম এবং এতে রয়েছে একটি ২৩ মিমি ব্যারেল কামান। পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের আর কোনো দেশ এই মডেলটি ব্যবহার করছে না।
পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র
চীনের তৈরি পিএল-১৫ নামক আকাশ-থেকে-আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান তার যুদ্ধবিমান থেকে ছুড়েছে বলে জানা গেছে। এটির পাল্লা ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার এবং এটি শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ গতিতে ছুটে টার্গেটে আঘাত হানতে পারে। এতে রয়েছে ডুয়াল-পালসড রকেট মোটর ও ইলেকট্রনিক স্ক্যান রাডার প্রযুক্তি।
এসএইচ-১৫ আর্টিলারি গান
পাকিস্তানি সেনারা ভারতের ভূখণ্ডে হামলার জন্য ব্যবহার করেছে চীন থেকে আমদানি করা এসএইচ-১৫ মোবাইল হাউইটজার গান। এটি ট্রাকচালিত হওয়ায় দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করে শত্রুকে লক্ষ্য করে ‘শুট অ্যান্ড স্কুট’ কৌশল প্রয়োগে সক্ষম। এই আর্টিলারি প্রতি মিনিটে ৪ থেকে ৬ রাউন্ড গুলি ছুড়তে পারে এবং জিপিএস ও ইনর্শিয়াল ন্যাভিগেশন সিস্টেম ব্যবহারের ফলে নিখুঁতভাবে টার্গেট চিহ্নিত করতে পারে।
উন্নত চীনা ড্রোন
ড্রোন হামলার ক্ষেত্রেও পাকিস্তান ব্যাপকভাবে চীনের উপর নির্ভর করেছে। দেশটির কাছে থাকা উইং লুং-২ এবং সিএইচ-৪ মডেলের ড্রোনগুলো পেশাদার সামরিক পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। উইং লুং-২ ড্রোনটি মাঝারি উচ্চতায় দীর্ঘসময় উড়তে পারে এবং সরাসরি আঘাত হানার ক্ষমতাসম্পন্ন। এর পাখার বিস্তার ২০ মিটার এবং এটি আগেও চীনের সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত হয়েছে। সিএইচ-৪ ড্রোন দেখতে অনেকটা আমেরিকার এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের মতো এবং এটি নজরদারি ও আক্রমণের উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
সামরিক বিশ্লেষকদের মূল্যায়ন
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীন-পাকিস্তান কৌশলগত সামরিক সহযোগিতা এবার সরাসরি ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে কার্যকরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। পাকিস্তান চীনা অস্ত্র ও প্রযুক্তির উপর ভর করে নিজেদের সামরিক প্রতিক্রিয়া শক্তিশালী করেছে এবং এর মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক সমতা ও প্রতিরোধ সক্ষমতার বার্তা দিয়েছে।
ভারত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এসব প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে পরবর্তী অবস্থান জানায়নি, তবে সীমান্তজুড়ে সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে এবং সম্ভাব্য পাল্টা জবাবের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?