পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভারতীয় ভূখণ্ডে নজিরবিহীন আক্রমণের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ তুলেছে নয়াদিল্লি। সেনাবাহিনী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী, ওই রাতে ভারতের ৩৬টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বার ড্রোনসহ সরাসরি আক্রমণের চেষ্টায় লিপ্ত হয় পাকিস্তান। ঘটনাটি ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক স্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে এক জরুরি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানান,
“পাকিস্তান সেনারা একাধিকবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। অধিকাংশ অনুপ্রবেশ ছিল ড্রোনের মাধ্যমে এবং বেশ কিছু ড্রোন গুলি করে নামানো হয়। এ ছাড়া, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গোলাবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।”
তিনি আরও বলেন, এসব ড্রোন ভারতে ঢুকে সেনা ঘাঁটির ছবি সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। ইতিমধ্যে ধ্বংস হওয়া ড্রোনগুলো ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বেশিরভাগ ড্রোনই তুরস্ক থেকে আমদানি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহও। তিনি জানান,
“পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক বিমান চলাচলের সময় ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করেছে। এটা আন্তর্জাতিক আইন এবং আকাশ নিরাপত্তা বিধিমালার সরাসরি লঙ্ঘন।”
তার অভিযোগ, পাকিস্তান শুধু ড্রোন পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, ভাটিন্ডা সেনাঘাঁটিতে সরাসরি যুদ্ধবিমান দিয়েও হামলার চেষ্টা চালায়। তবে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকায় এই আক্রমণ ব্যর্থ হয়।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ভাষ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান এখন কূটনৈতিকভাবে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন,
“পুঞ্চ জেলার একটি গুরুদ্বারে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে, যার প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। অথচ পাকিস্তান দাবি করছে তারা কোনো ধর্মীয় স্থানকে লক্ষ্য করেনি।”
তিনি আরও বলেন,
“পাকিস্তান পহেলগাঁও হামলাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত কর্তারপুর সাহেব করিডরের মাধ্যমে চলমান সীমান্ত বাণিজ্য সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিল্লির ভাষ্য, এ পদক্ষেপ শুধু কূটনৈতিক চাপ নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার একটি পদক্ষেপ।
এদিকে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলে ধারণা করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি আক্রমণ এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা নতুন করে চরমে পৌঁছেছে।
সূত্র: আনন্দবাজার

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?