কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে টানা পাল্টাপাল্টি হামলায় কার্যত যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে দক্ষিণ এশিয়ায়। এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রতি সরাসরি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। শুক্রবার (৯ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি পাকিস্তানি জনগণ ও সরকারকে ভ্রাতৃপ্রতিম জাতি হিসেবে সমবেদনা জানান এবং সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
এরদোয়ান বলেন,
“আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা একটি উন্মুক্ত যুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই অবস্থায় আমাদের সমর্থন পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে।”
তিনি আরও লিখেছেন,
“পাকিস্তানে প্রাণ হারানো ভাইদের জন্য আমি আল্লাহর রহমত কামনা করছি এবং পাকিস্তানের জনগণ ও নেতৃত্বের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জানান, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিনি ইতোমধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। ওই আলোচনায় ভারতের অধিকৃত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের পাকিস্তানি প্রস্তাবকে ‘গঠনমূলক’ এবং ‘দরকারি পদক্ষেপ’ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন তিনি।
এরদোয়ান সতর্ক করে বলেন,
“সংঘাত এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন। আমরা চাই সংকটের আগে সংলাপের পথ খুলে দেওয়া হোক, যার জন্য তুরস্ক আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারত পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একাধিক এলাকায় বিমান হামলা চালায়। টার্গেট করা হয় আহমেদপুর পূর্ব, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শক্করগড়, এবং আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলি। পাকিস্তান দাবি করেছে, এসব হামলায় অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৫৭ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান এবং সাতটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একটি ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার ও একাধিক চেকপোস্ট ধ্বংস করার কথাও জানিয়েছে তারা।
ইসলামাবাদ এক বিবৃতিতে জানায়,
“ভারতের পক্ষ থেকে কোনো দুঃসাহসিকতা দেখানো হলে তার জবাব হবে এতটাই নির্ণায়ক যে তা ঘোষণার অপেক্ষা রাখবে না—বিশ্ব নিজেই তা টের পাবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পর্যায়ের সংঘর্ষ শুধু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এতে দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপাশি মুসলিম বিশ্ব, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বৃহৎ শক্তিগুলোর ভূরাজনৈতিক অবস্থানও নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?