চীনের তৈরি চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান জে-১০ দিয়ে ভারতের অন্তত দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান—এমন দাবি তুলে সামরিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংস্থাটি জানিয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী, পাকিস্তান সফলভাবে চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করেছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, পাকিস্তানি বিমানবাহিনী জে-১০ থেকে এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে ভারতীয় দুটি যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে একটি ছিল ফরাসি নির্মিত রাফাল যুদ্ধবিমান। অন্য একজন মার্কিন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনাটি ভারত-চীন সামরিক প্রযুক্তির পারস্পরিক প্রতিযোগিতার একটি তাৎপর্যপূর্ণ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে এই ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আসেনি। রয়টার্স ভারতীয় বিমান বাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। একইভাবে, ছুটির দিন থাকায় ফরাসি নির্মাতা দাসো অ্যাভিয়েশন এবং ইউরোপীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতকারক এমবিডিএ-র পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
তবে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে ফ্রান্সের গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, ভারতীয় বাহিনীর ব্যবহৃত একটি রাফাল যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের হামলায় ভূপাতিত হয়েছে বলে তারা ধারণা করছে।
রয়টার্স আরও জানায়, ভারতের স্থানীয় প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী অন্তত তিনটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে গেছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, “আমাদের জে-১০ যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে তিনটি রাফাল ধ্বংস হয়েছে।”
এর আগে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা ভারতের মোট পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল ফরাসি রাফাল জেট। এই সংঘর্ষ ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনাকে এক নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, রাফাল ও জে-১০ উভয়ই ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত। কিন্তু এবারকার সংঘাতে চীনের জে-১০ কার্যকরভাবে ব্যবহার করে পাকিস্তান যা করেছে, তা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্য নয়, বরং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনা যুদ্ধ প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়েও বড় বার্তা দিচ্ছে।
এমন এক সময় এই ঘটনা ঘটল যখন তাইওয়ান প্রণালীসহ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা সামরিক শক্তিগুলোর মধ্যে উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়ছে। জে-১০ এর সাফল্য তাই শুধু পাকিস্তানের নয়, বরং চীনের সামরিক কৌশলের জন্যও এক ধরনের কূটনৈতিক ‘প্রমাণপত্র’ হয়ে উঠতে পারে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?