সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের (এনএসএ) মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে। পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দেশটির এনএসএ ও আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম এবং ভারতের এনএসএ অজিত ডোভালের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
যদিও এই আলোচনার নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু এখনো প্রকাশ করা হয়নি, সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ ধরনের সংলাপ দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতা, এই আলোচনায় ভূমিকা রেখেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তান সামরিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, পাল্টা অভিযানে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। ভূপাতিত যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে ফ্রান্সের তৈরি রাফালে এবং রাশিয়ার মিগ-২৯ ও সু-৩০ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানানো হয়। পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এক বিবৃতিতে জানান, আরও অধিক সংখ্যক বিমান ভূপাতিত করার সক্ষমতা থাকলেও পাকিস্তান সংযম দেখিয়েছে।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমে এসব দাবির প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। কিছু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, যদি রাফালের মতো চতুর্থ প্রজন্মের উন্নত যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়ে থাকে, তবে তা ভারতের সামরিক কৌশলের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ফরাসি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধক্ষেত্রে রাফালের সম্ভাব্য ক্ষতি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা।
বিশ্লেষকরা এটিকে কেবল ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, বৃহত্তর সামরিক প্রযুক্তির প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবেও দেখছেন। বিশেষ করে পাকিস্তান সম্প্রতি চীনের তৈরি জে-১০সি যুদ্ধবিমান বহরে যুক্ত করায়, এ ধরনের সংঘর্ষে চীন ও পশ্চিমা প্রযুক্তির কার্যকারিতাও অনানুষ্ঠানিকভাবে তুলনা করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের বালাকোট পরিস্থিতির সঙ্গে এবারের প্রতিক্রিয়ার পার্থক্য উল্লেখযোগ্য। তখন পাকিস্তান একদিন সময় নিয়ে জবাব দিয়েছিল, এবার তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আগে থেকেই প্রতিক্রিয়ার নির্দেশনা ছিল ‘কুইড প্রো কো প্লাস’ ভিত্তিতে—অর্থাৎ শুধুমাত্র সমমানের নয়, বরং অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ একটি ইতিবাচক দিক। তবে সামরিক প্রযুক্তির পাল্টাপাল্টি উন্নয়ন এবং যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার মতো ঘটনাগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ভারসাম্য এবং কৌশলগত স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?