ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান দাবি করেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাল্টা হামলায় তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ভারতীয় বিমানবাহিনীর একাধিক যুদ্ধবিমান ও একটি কৌশলগত ব্রিগেড ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। পাকিস্তানি সামরিক সূত্রের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই অভিযানে রাফাল, মিগ-২৯ এবং সু-৩০ যুদ্ধবিমানসহ ইসরায়েলি প্রযুক্তির একটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমদ শরিফ চৌধুরি বলেন, “ভারতীয় বাহিনীর নগ্ন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী নির্ভুল জবাব দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতীয় কয়েকটি সামরিক চৌকি ও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান, দুটি রাশিয়ান মিগ-২৯, একটি সু-৩০ জেট এবং একটি হেরন ড্রোন ভারতীয় হামলার সময়ই প্রতিহত ও ধ্বংস করা হয়। তাদের দাবি, এসব বিমান পাকিস্তানি সীমান্তের ভেতরে ঢুকে পড়ার পরই পাল্টা প্রতিরোধ শুরু হয়।
সূত্র আরও জানায়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১২ নম্বর পদাতিক ব্রিগেড, যেটি নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে একটি কৌশলগত অবস্থানে ছিল, সেটিও পাকিস্তানি পাল্টা হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। ব্রিগেডটি ছিল একটি অপারেশনাল হেডকোয়ার্টার, যেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অভিযানের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানান, “পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী আত্মরক্ষার্থে যথাযথ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ভারতীয় আগ্রাসনের দায়ভার তাদেরই বহন করতে হবে।” তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান তার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর জবাব দিয়েছে এবং এই হামলা তাদের ‘ঋণ শোধ’ বলে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামের সামরিক অভিযানের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, পাকিস্তানের নয়টি জায়গায় টার্গেটেড স্ট্রাইক চালানো হয়েছে, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো ছিল। ভারতীয় পক্ষ দাবি করেছে, এই হামলা সরাসরি কোনো সেনাসদস্যের ওপর নয়, বরং অপারেশনাল সুবিধা ধ্বংসে পরিচালিত।
এই উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, “ভারত পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে। এ ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনী পুরো জাতির সম্মিলিত শক্তি নিয়ে জবাব দিচ্ছে। এ লড়াইয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছে।”
সীমান্ত সংঘর্ষের মাত্রা বাড়তে থাকায় ইসলামাবাদে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠকের আহ্বান করেছেন প্রধানমন্ত্রী। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সেনাপ্রধান ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে এমন সরাসরি পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন পর্যবেক্ষকরা।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?