ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর সফল ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দখলকৃত ভূখণ্ড ইসরাইলে সামরিক অস্থিরতা ও কৌশলগত দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি রাফা ও তেল আবিবে ধারাবাহিক আক্রমণের মধ্যে আশকেলন শহরের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে ইয়েমেনি ড্রোন আঘাত হানার ঘটনায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অকার্যকারিতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইসরাইলি দৈনিক মা’আরিভ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইহুদিবাদী সামরিক বিশ্লেষক ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গাবি আশকেনাজি বলেন, ইয়েমেনি ড্রোন হামলাটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাত্র কয়েক মিটার দূরে আঘাত হানে, যা ইসরাইলের জন্য অত্যন্ত অশনিসংকেত। তিনি স্বীকার করেন, ইয়েমেনি আক্রমণ এখন কেবল প্রতীকী হামলা নয়, বরং ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে পরিচালিত একেবারে পরিকল্পিত অভিযান।
আশকেনাজি জানান, গত দেড় বছরে ইয়েমেন থেকে ইসরাইলের দিকে ডজনের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়া হয়েছে। প্রতিটি হামলায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি। তার মতে, “এই হুমকি বন্ধ করতে হলে আকাশে প্রাচীর নির্মাণ করতে হতো—যা অসম্ভব। বাস্তবতা হলো, ইয়েমেন এখন আমাদের কৌশলগত চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।”
তিনি বলেন,
“ইয়েমেনিরা এখন কেবল ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে না, বরং ইসরাইলের সার্বভৌমতার প্রতীকগুলোর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে, বাব আল-মান্দাব প্রণালীতে আধিপত্য বজায় রাখছে এবং ইলাত ও ভূমধ্যসাগরের বন্দরগুলোতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে। এটি ইসরাইলকে কার্যত একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত করেছে।”
সম্প্রতি ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গাজার জনগণের ওপর ইসরাইলি নৃশংসতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অংশ হিসেবে তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট জাফা অঞ্চলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি সফল অভিযান পরিচালনা করেছে।
এই হামলার পরপরই আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো একের পর এক তেল আবিবগামী ফ্লাইট বাতিল কিংবা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে। তেল আবিবের আকাশপথ এখন চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে, যা ইসরাইলের জন্য কেবল সামরিক নয়, বরং কৌশলগত ও কূটনৈতিক সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ইয়েমেনি প্রতিরোধের এক নতুন ধারা, যেখানে তারা শুধুমাত্র রণক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও ইসরাইলকে চাপের মুখে ফেলছে। যেসব প্রতিরোধপন্থী গোষ্ঠী এতদিন আঞ্চলিকভাবে গণ্য হতো, আজ তারা পরাশক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কৌশলে সফল আঘাত হানছে—এটা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে এক অভূতপূর্ব রূপান্তর।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?