কাশ্মিরের পেহেলগামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা নিয়ে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। বুধবার (৩০ এপ্রিল) পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় এক বিশাল মিছিলে অংশ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হন তারা।
এবার ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামল পাকিস্তানের সকল হিন্দু সম্প্রদায়—এ এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য, যা প্রমাণ করে, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ধর্মীয় পরিচয় নয়, দেশপ্রেমই বড় পরিচয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির সংখ্যালঘু প্রতিনিধি ও বেলুচিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সঞ্জয় কুমার। সমাবেশে তিনি কড়া ভাষায় বলেন,
“কাশ্মিরে যা ঘটেছে, তা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পরিকল্পিত অপপ্রচারের অংশ। আমাদের হিন্দু সম্প্রদায় সেনাবাহিনীর পাশে আছে। যদি ভারত পাকিস্তানের সীমান্তে আগ্রাসনের সাহস দেখায়, তাহলে এক কোটির বেশি পাকিস্তানি হিন্দু রুখে দাঁড়াবে।”
সারা কোয়েটা জুড়ে অনুষ্ঠিত এই মিছিলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাদের হাতে ছিল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ছিল:
‘কাশ্মির নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধ করো’, ‘ভারতের ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে পাকিস্তান’, ‘হিন্দুরা নীরব নয়, লড়াইয়ে প্রস্তুত’।
প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে আরও একাধিক বক্তা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান এবং ভারতের একতরফা সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের ঘোষণাকে আন্তর্জাতিক চুক্তির ঘোরতর লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেন।
একজন নারী বক্তা বলেন,
“১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তি শুধু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নয়, এটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতীক। ভারতের unilateral সিদ্ধান্ত শুধু বিপজ্জনক নয়, এটি বৈশ্বিক শান্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ।”
সমাবেশ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভটি শেষ হয়। তবে এই ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনার আবহে একটি নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। পাকিস্তানে বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায়ের এই জাতীয়তাবাদী অবস্থান ভারতের নীতিনির্ধারকদেরও ভাবিয়ে তুলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বসবাসরত সংখ্যালঘুদের এমন ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া কেবল ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ নয়, এটি একটি কূটনৈতিক বার্তা—পাকিস্তান শুধু মুসলিম রাষ্ট্র নয়, এটি সংখ্যালঘুদের নিরাপদ আশ্রয়ও, যারা প্রয়োজনে অস্ত্র ধরতেও প্রস্তুত।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?