পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নয়াদিল্লির পরবর্তী লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক থিঙ্কট্যাংক সংস্থা চ্যাথাম হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পাকিস্তানি এক সাংবাদিক কাশ্মীর প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুললে জয়শঙ্কর বলেন,
“আমরা ধাপে ধাপে এগোচ্ছি এবং ইতোমধ্যে অনেকাংশে বিষয়টি গুছিয়ে এনেছি।” তিনি জানান, “কাশ্মীরে সমস্যার বড় অংশ সমাধান করা হয়েছে। প্রথম ধাপে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে, তৃতীয় ধাপে বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এখন চতুর্থ ধাপে আমাদের লক্ষ্য হলো, জম্মু-কাশ্মিরের যে অংশটি পাকিস্তান দখল করে রেখেছে, তা ভারতের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা।”
কাশ্মীর সংকট সমাধানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে জয়শঙ্কর বলেন,
“এটি দ্বিপক্ষীয় ইস্যু। সমাধানে আমাদের আর কাউকে প্রয়োজন নেই।” তিনি আরও বলেন, “যদি আমরা পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে সফল হই, তাহলে কাশ্মীর ইস্যু চূড়ান্তভাবে সমাধান হবে।”
ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন শেষে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার সময় থেকেই কাশ্মীর সংকটের সূত্রপাত। জম্মু-কাশ্মিরের শেষ মহারাজা হরি সিং প্রথমে স্বাধীন থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পাকিস্তানের আক্রমণের মুখে তিনি ভারতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করেন। পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে কিছুটা পিছু হটাতে সক্ষম হয়। এরপর থেকে জম্মু-কাশ্মিরের প্রায় ৪৩ শতাংশ ভারতের, ৩৭ শতাংশ পাকিস্তানের এবং ২০ শতাংশ চীনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ভারতে অন্তর্ভুক্তির পর জম্মু-কাশ্মিরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয় সংবিধানের ৩৭০ ধারার মাধ্যমে। তবে ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পার্লামেন্টে কণ্ঠভোটের মাধ্যমে ৩৭০ ধারা বাতিল করে। এরপর অঞ্চলটিতে সরাসরি কেন্দ্রীয় শাসন আরোপ করা হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের বর্তমান অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় কাশ্মীর ইস্যুতে নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। বিশেষ করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির নিয়ে নয়াদিল্লির প্রকাশ্য ঘোষণা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্বকে আরও জটিল করে তুলবে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও কাশ্মীর সংকটের ভবিষ্যত গতিপথ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?