ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের আত্মসমর্পণের প্রশ্নই ওঠে না—এমন মন্তব্য করেছেন খ্যাতনামা ব্রিটিশ বিশ্লেষক ও মিডল ইস্ট আই ওয়েবসাইটের সম্পাদক ডেভিড হার্স্ট। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “হামাসের আত্মসমর্পণ মানেই ফিলিস্তিনি ইস্যুকে বিসর্জন দেওয়া। একমাত্র পথ—প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া।”
হার্স্ট তাঁর বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন,
“ইহুদিবাদী ইসরাইল এখনও হামাসকে চিনতে পারেনি। যুদ্ধের ১৮ মাস এবং দুর্ভিক্ষের মাঝেও হামাস নেতারা মজবুতভাবে টিকে আছেন। এতে বোঝা যায়, ইসরাইলের দখলদার নীতি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে।”
তিনি বলেন, গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ এবং দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার দুইটি মূল লক্ষ্যেই ইসরাইল সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ইরনার বরাতে পার্সটুডে জানায়, হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মাহমুদ মারদাভিও এক বিবৃতিতে বলেছেন,
“গাজার প্রতিরোধ শক্তিগুলোকে নিরস্ত্রীকরণ কিংবা দমন করার দাবি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং আলোচনার অযোগ্য। এই পরিকল্পনা মূলত পুরনো ইহুদি-মার্কিন প্রস্তাব, যার লক্ষ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মরক্ষার অধিকারকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।”
পাশাপাশি, পশ্চিম এশিয়ার একজন বিশেষজ্ঞ আলিরেজা আরব বলেন,
“ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তির যুদ্ধ এখন সবচেয়ে স্পর্শকাতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। হামাস শুধু টিকে নেই, তারা আরও শক্তিশালী হচ্ছে। গাজায় যুদ্ধ চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত এই সংঘাত ইসরাইলের জন্যই বড় ক্ষতির কারণ হবে।”
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুহাম্মদ আল-কিক বলেন, “হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বারবার যে চাপ দেওয়া হচ্ছে, তা একটি ব্যর্থ কৌশল। হামাস নিজেদের অস্তিত্ব ও অধিকারের প্রশ্নে কোনো আপস করবে না।”
এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা মাইকেল মিলস্টেইন এক বিশ্লেষণে স্বীকার করেছেন, হামাস যোদ্ধাদের এই অটলতা ও সংগ্রামের উৎস হলো তাদের ধর্মীয় অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, “এই মানসিক শক্তি এমন একপ্রকার বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে, যা কেবল অস্ত্র দিয়ে দমন করা যায় না।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক অবস্থান যতটাই প্রশ্নবিদ্ধ হোক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে—তাদের প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে গাজায় কোনো সমাধান সম্ভব নয়। বরং এই সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে তা ইসরাইলের কৌশলগত ক্ষতিসাধনই বাড়াবে এবং পুরো অঞ্চলকেই অস্থির করে তুলবে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?