ইরানের সেনাবাহিনী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (AI) অতি গোপনীয় অস্ত্র প্রস্তুত করেছে বলে জানিয়েছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পদাতিক বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিওউমার্স হেইদারি।
গত শনিবার আল–আলম টিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জেনারেল হেইদারি বলেন,
“আমাদের কাছে এমন কিছু অতি আধুনিক অস্ত্র রয়েছে, যেগুলোর কৌশলগত গুরুত্ব এতটাই বেশি যে এখনো তা জনসমক্ষে আনা হয়নি। এই অস্ত্রগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে বিপুল কার্যকারিতা রয়েছে। সেগুলো এখনো প্রচলিত অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হলেও এগুলোর প্রযুক্তি এবং ব্যবহারযোগ্যতা অত্যাধুনিক।”
তিনি বলেন,
“আমাদের সেনাবাহিনী শত্রুপক্ষের যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমরা জানি আমাদের সামনে কারা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা তাদের তুলনায় অনেক বেশি।”
ইরাক-ইরান যুদ্ধ (১৯৮০–১৯৮৮) পরবর্তী সময়ে ইরানের সামরিক কৌশল ও বাহিনীগঠনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে বলে জানান হেইদারি।
তিনি বলেন,
“বর্তমানে ইরানের পদাতিক বাহিনী উচ্চ গতিতে বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন হতে পারে। আমাদের রয়েছে ঝটিকা হামলার পূর্ণ প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়াশীল হামলা চালানোর সক্ষমতা।”
এই প্রেক্ষাপটে ইরানের নতুন রাষ্ট্রপতি মাসুদ পেজেশকিয়ানও সম্প্রতি সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, “আমাদের সামরিক বাহিনী শুধু ইরানের জন্য নয়, গোটা পশ্চিম এশিয়ার জন্য একটি আদর্শ শক্তি হিসেবে গড়ে উঠেছে। তারা এখন প্রতিরোধ, নিরাপত্তা এবং আত্মরক্ষার এক অপ্রতিরোধ্য প্রতীক।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই প্রযুক্তিনির্ভর সামরিক প্রস্তুতি শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তার ভারসাম্যই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মতো শক্তিধর দেশগুলোর জন্যও স্পষ্ট বার্তা বহন করে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের এই সামরিক শক্তি পুনরায় আলোচনায় এসেছে।
ইরান দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরোধ কাঠামো উন্নয়নে জোর দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও দেশটি অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তি নির্ভর করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, যুদ্ধবিমান এবং উন্নত ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করেছে। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন গোপন অস্ত্রের তথ্য সেই শক্তির আরেকটি স্তর প্রকাশ করছে।
বিশ্ব রাজনীতিতে ইরানের এই অবস্থানকে শক্তিশালী করতে নতুন এই অস্ত্র প্রযুক্তি এবং প্রতিরোধ কৌশল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে গাজা, ইয়েমেন, লেবানন ও ইরাকের প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে ইরানের সমন্বয় এবং নেতৃত্ব মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বহুমুখী প্রতিরোধ জোটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান এই ধরনের ঘোষণার মাধ্যমে শুধু প্রতিপক্ষকে বার্তা দিচ্ছে না, বরং নিজের মিত্র ও অঞ্চলজুড়ে প্রতিরোধ ফ্রন্টের মনোবলও দৃঢ় করছে। ফলে এই ঘোষণাকে নিছক সামরিক কৌশল হিসেবে নয়, বরং একটি কূটনৈতিক শক্তি প্রদর্শন হিসেবেও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?