জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (UNOCHA)-এর মুখপাত্র জেন্স লর্ক গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান অভিযানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এটিকে “বর্বর অপরাধ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গাজা উপত্যকা এখন মানব জীবন ও মর্যাদার প্রতি এক নির্মম অবজ্ঞার জ্যান্ত প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও জানান, ইসরাইলি সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত গাজার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার যে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে, তা শুধু আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন নয়, একইসঙ্গে স্থানীয় পরিবারগুলোর বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকেও চরমভাবে সংকুচিত করে ফেলছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারও এই অবস্থাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের মারাত্মক দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। হাইকমিশনারের মতে, গাজার সাধারণ ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও যুদ্ধাপরাধবিষয়ক বিধানাবলির সরাসরি লঙ্ঘন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইল নতুন করে গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান ও স্থল অভিযানের নামে বেসামরিক মানুষের ওপর আক্রমণ জোরদার করে। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের সহায়তায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে তা একেবারেই উপেক্ষিত।
দখলদার ইসরাইলি সরকার ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে যেভাবে ধারাবাহিকভাবে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বর্বর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, তা ইতিহাসের অন্যতম নির্মম গণহত্যার রূপ নিয়েছে। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছেন—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। পাশাপাশি, এখনো ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় ইসরাইলের এই আগ্রাসন শুধু মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং এটি এক সুপরিকল্পিত জাতিগত নির্মূলের অংশ, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিক্রিয়া এবং কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া বন্ধ করা অসম্ভব হয়ে উঠছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ক্রমাগত সতর্কতা সত্ত্বেও বিশ্ব শক্তিগুলোর নির্লিপ্ত অবস্থান গভীর উদ্বেগ ও নিন্দার জন্ম দিচ্ছে।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?