রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান টেলিফোনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। শুক্রবার (১৪ মার্চ) ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সৌদি আরবের জনগণ ও সরকারের প্রতি পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, “রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পবিত্র রমজান মাসে সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ এবং জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের প্রতি উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।”
উভয় নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ক্রেমলিন আরও জানায়, রাশিয়া-সৌদি সম্পর্ককে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলকভাবে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে উভয় পক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সৌদি প্রেস এজেন্সি এসপিএ জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মধ্যে দুই নেতার এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি আরবের জেদ্দায় সম্প্রতি ওয়াশিংটন ও কিয়েভের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পরই এই ফোনালাপটি হয়।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইউক্রেন সংকট নিরসনে সংলাপ সহজতর করার জন্য এবং একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য সৌদি আরবের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে জ্বালানি খাত, কৌশলগত সহযোগিতা এবং ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে, ওপেক প্লাস জোটে উভয় দেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তেলের উৎপাদন নীতি নির্ধারণে রাশিয়া-সৌদি সহযোগিতা বৈশ্বিক বাজারের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
সাম্প্রতিক সময়ে, সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশেষ করে, ইউক্রেন যুদ্ধ, ইরান-সৌদি সম্পর্কের উন্নয়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ইস্যুতে সৌদি নেতৃত্ব সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
এই ফোনালাপের মাধ্যমে রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গেও সহযোগিতা বাড়ানোর নীতি অনুসরণ করছে।
এদিকে, রাশিয়া-সৌদি কূটনৈতিক সংলাপের ধারাবাহিকতায় আগামী মাসে উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, বিনিয়োগ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই টেলিফোন আলাপ আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতিতে সৌদি আরবের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ভূমিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহৎ শক্তিগুলোর সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?